।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
হাঁপানি একটি অসংক্রামক রোগ (এনসিডি)। এতে বড়রা এমনকি ছোটরাও আক্রান্ত হয়। এটি শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগ (রেফ)। শীতকালে ঠান্ডা ও শীতল আবহাওয়া, উড়ন্ত ধুলাবালু, শুষ্ক বাতাস, ঘর ঝাড়মোছ করলে বা ফুলের পরাগ রেণুর সংস্পর্শে এলে রোগীর প্রায়ই হাঁপানির টান ওঠে। ভাইরাস সংক্রমণ, সর্দিকাশি, ফ্লুও এ সময় বেশি হয়। আবার অ্যাজমা জনিত কারণে শ্বাসনালিগুলো ফুলে যায়, সরু হয় ও অতিরিক্ত শ্লেষ্মা তৈরির কারণও হতে পারে, ফলে শ্বাস নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে।
যেসব লক্ষণে সতর্ক হবেন
হাঁপানির লক্ষণসমূহ এক রোগী থেকে থেকে অন্য রোগীর মধ্যে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে ঠান্ডা ঋতুতে পরিলক্ষিত কিছু সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে- শ্বাসকষ্ট, বুকে শক্ত হওয়া, ব্যথা, কাশি বা শ্বাসকষ্ট।
কিছু হাঁপানি রোগী কাশি, নাক বন্ধ, সর্দি, গলা ব্যথা ও ঘন শ্লেষ্মার সমস্যায় ভুগতে পারেন। এসব লক্ষণ দেখলে শীতে সচেতন হতে হবে। এছাড়া ফ্লু’র মতো সংক্রমণও হাঁপানি রোগীদের উপসর্গ আরও গুরুতর করে তোলে। এসব লক্ষণে ভুগলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কীভাবে ইনহেলার হাঁপানি রোগীদের জন্য কতটা উপকারী? ইনহেলার হাঁপানির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে ও লক্ষণের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে। ইনহেলার ব্যবহারের পর শ্বাসনালিকে শিথিল করতে ও ভালোভাবে শ্বাস নিতে সহায়তা করে।
অ্যাজমার ওষুধ নানাভাবে প্রয়োগ করা পদ্ধতি:-
ইনহেলার পদ্ধতি : এটি সবচেয়ে উপকারী এবং আধুনিক পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ওষুধ নিশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাসনালিতে কাজ করে। এগুলো ইনহেলার, রোটাহেলার, একুহেলার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ট্যাবলেট অথবা সিরাপ : ওষুধ রোগীর রক্তে প্রবেশ করে ফুসফুসে গিয়ে কাজ করে।
নেবুলাইজার : তীব্র অ্যাজমার আক্রমণে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।
ইনজেকশন : অ্যাজমার মারাত্মক আক্রমণে স্টেরয়েড ইনজেকশন শিরায় দেওয়া হয়।
যেসব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে:-
➤ ঘর-বাড়িকে ধুলোবালি থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করা। এজন্য দৈনিক অন্তত একবার ঘরের মেঝে, আসবাবপত্র, ভেজা কাপড় দিয়ে মুছতে হবে অথবা ভ্যাকিউম ক্লিনার ব্যবহার করতে হবে।
➤ ঘরে কার্পেট না রাখা।
➤ বালিশ, তোষক, ম্যাট্রেসে তুলা ব্যবহার না করে স্পঞ্জ ব্যবহার করা।
➤ আতর, সেন্ট, পারফিউম ব্যবহার না করাই উত্তম।
➤ যেসব খাবার অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তা পরিহার করা বা এড়িয়ে চলা।
➤ ধূমপান না করা।
➤ ফুলের রেণু পরিহার করতে হবে, সকাল কিংবা সন্ধ্যায় বাগান এলাকায় কিংবা শস্য ক্ষেতের কাছে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।
➤ কুকুর, বিড়াল, কবুতর ও পশু-পাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।
➤ দিনে বা রাতে কুয়াশায় চলাফেরার সময় নাক ঢেকে রাখুন (গায়ে পর্যাপ্ত শীতের কাপড় থাকলেও)।
➤ স্যাঁতসেঁতে বা ঘিঞ্জি পরিবেশ এড়িয়ে চলুন। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা পরিবেশ ক্ষতিকর।
➤ রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় সম্ভব হলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন।