।। লাইফস্টাল ডেস্ক ।।
ডায়াবেটিস হলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। পরিমিত খাবার, শারীরিক শ্রম ও ক্ষেত্রবিশেষে ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়েও সুস্থ থাকা যায়। তবে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন রোগটি শনাক্ত করা। অনেক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী জানেন না যে তার রোগটি হয়েছে। তাই আগে জানা প্রয়োজন আপনার ডায়াবেটিস আছে কি না!
বিশ্বে প্রায় ৪২ কোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব রক্তের শর্করার মাত্রা হ্রাস করে। ডায়াবেটিসে শুরু হয়ার প্রথম থেকেই যদি জীবনধারায় পরিবর্তন আনা যায় তাহলে ডায়াবেটিসকে দ্রুত বসে আনা যায়।
বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়া দাওয়ায় পরিবর্তন আনা জরুরি। যেসব খাবারে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম থাকে, সেসব খাবার ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিশেষ উপকারী। তাই দৈনিক খাবারের তালিকায় রাখুন কয়েকটি পুষ্টিকর সবজি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ডায়াবেটিস প্রধানত টাইপ-ওয়ান ও টাইপ-২, এই দুইভাবে আমরা ভাগ করি। আমাদের দেশে ৯৫ শতাংশ রোগী টাইপ-২ ধরনের। টাইপ-ওয়ান হচ্ছে যাদের শরীরে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি হয় না। তাদের ইনসুলিন বা পুরোপুরি ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয়। সেজন্য সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে টাইপ-২ ধরনের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে রাখলে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস ঠেকিয়ে রাখা বা বিলম্বিত করা সম্ভব।
যে সব লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে আপনার ডায়াবেটিস হতে পারে:
➤ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা।
➤ দুর্বল লাগা’ ও ঘোর ঘোর ভাব আসা।
➤ ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া।
➤ সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া।
➤ মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া।
➤ কোন কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া।
➤ শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলেও দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা।
➤ চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব।
➤ বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা।
➤ চোখে কম দেখতে শুরু করা।
যে চারটি সবজি প্রতিদিন খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
গাজর: গাজরে থাকে বিটা ক্যারোটিন, ফাইবার, ভিটামিন কে ১, ভিটামিন এ ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এ ছাড়াও গাজরে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণও অনেক কম, মাত্র ১৬। তাই প্রতিদিন গাজর খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ব্রকলিঃ ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন পাতে রাখুন ব্রকলি। কারণ এতে থাকে আয়রন, ভিটামিন সি, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ একাধিক পুষ্টি উপাদান যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
শসা: ওজন কমাতে শসার ভূমিকা অপরিসীম। এতে পানির পরিমাণ বেশী থাকে, যা শরীরকে আর্দ্র রাখতে সহায়তা করে।
ঢেঁড়স: ঢেঁড়স ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারী। এতে আছে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ফাইবার ইত্যাদি। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ মাত্র ১৭-২০।
ডায়াবেটিস যত তাড়াতাড়ি শনাক্ত করা যাবে, সেই রোগীর জন্য সেটা ততো ভালো। তাতে তিনি যেমন রোগটির চিকিৎসা দ্রুত শুরু করতে পারবেন, পাশাপাশি তার জীবনযাপনও একটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে। তাই প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।