।। টেক ডেস্ক ।।
চলতি বছরের সেরা অ্যাপ ও গেমের তালিকা প্রকাশ করেছে অ্যাপল। অ্যাপ স্টোর অ্যাওয়ার্ড’-এ আইফোনের জন্য বছরের সেরা অ্যাপ নির্বাচিত হয়েছে জনপ্রিয় ফরাসি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম বিরিয়েল। আইফোন বিভাগ থেকে অ্যাপ স্টোর অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে অ্যাপটি।
সামাজিক মাধ্যম হিসেবে এই বছরের ‘সেরা চমক’ ছিল বিরিয়েল। এমনকি তাদের ফিচার ‘নকল করতে’ বাধ্য হয়েছে টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক জায়ান্টরাও। ফ্রান্স-ভিত্তিক এই কোম্পানির আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০২০ সালে। তবে, দিনের যেকোনো সময় সামনের ও পেছনের ক্যামেরায় দুই মিনিটের মধ্যেই ছবি পোস্টের ‘অ্যালার্ট’ সুবিধা চালু করায় এই বছর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে অ্যাপটি।
সম্প্রতি অ্যাপলের ডেভেলপারস সাইটে এই বছরের সেরা অ্যাপগুলোকে বিভিন্ন খেতাবে ভূষিত করার পাশাপাশি বিনামূল্যের ও পেইড ক্যাটাগরিতে সর্বাধিক ডাউনলোড করা অ্যাপ ও গেমের তালিকাও প্রকাশ করেছে মার্কিন এই প্রযুক্তি জায়ান্ট।
এইসব পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়েছে আইফোন, আইপ্যাড, অ্যাপল ওয়াচ, ম্যাক ও অ্যাপল টিভি’সহ কোম্পানির সকল প্ল্যাটফর্মে থাকা বিভিন্ন অ্যাপ।
এ বছর অ্যাপ স্টোর অ্যাওয়ার্ড পাওয়া অন্য অ্যাপগুলো হলো আইপ্যাড বিভাগে গুড নোটস ফাইভ, ম্যাক বিভাগে ম্যাক ফ্যামিলি ট্রি ১০, অ্যাপল টিভি বিভাগে ভিআইএক্স, অ্যাপল ওয়াচ বিভাগে জেন্টলার স্ট্রেক।
সেরা অ্যাপ ও গেমের পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব বিস্তার করা পাঁচটি অ্যাপকেও অ্যাপ স্টোর অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে অ্যাপল। অ্যাপগুলো হলো হাও উই ফিল, ডটস হোম, লকেট উইজেট, ওয়াটারলামা এবং ইনুয়া।
“নতুন, চিন্তাশীল ও প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গি সরবরাহকারী অ্যাপের মাধ্যমে আমাদের অভিজ্ঞতাকে নতুন করে কল্পনা করেছেন এই বছরের অ্যাপ স্টোর পুরষ্কার বিজয়ীরা।” –এক বিবৃতিতে বলেন অ্যাপল প্রধান টিম কুক।
গত বছরের আয়োজনে আলাদা একটি বিভাগ রেখেছিল অ্যাপল, যা ‘অ্যাপস দ্যাট ব্রট আস টুগেদার’ নামে পরিচিত। ওই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এই বছর ‘কালচারাল ইমপ্যাক্ট’ নামে আরেকটি বিভাগের আত্মপ্রকাশ করে কোম্পানিটি। এতে তারা এমন কিছু অ্যাপকে বেছে নিয়েছে, যেগুলো ‘মানুষের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্কৃতিতেও প্রভাব ফেলেছে’।
এই তালিকায় আছে অলাভজনক সংস্থা ‘হাও উই ফিল প্রজেক্ট’-এর নিজস্ব অ্যাপ, যেখানে লগ ইন করে বিভিন্ন ‘অনুভূতির চেক-ইন’ দেওয়া যায়। এর উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, ‘রিল্যাক্সড’, ‘ফ্যাটিগড’, ‘চিল’, ‘কমফোর্টেবল’, ‘মেলো’ ইত্যাদি।
‘রাইজ-হোম স্টোরিজ প্রজেক্ট’-এর নিজস্ব অ্যাপে ফুটে ওঠে পদ্ধতিগত গৃহ নিপীড়ণের গল্প ও বিভিন্ন বর্ণের মানুষের ওপর এর প্রভাবের বিষয়গুলো। আর একটি হোম স্ক্রিন উইজেটে বন্ধু ও পরিবারের মধ্যে সরাসরি ফটো শেয়ারিংয়ের সুবিধা দেয় ‘লকেট ল্যাবস’-এর তৈরি ‘লকেট উইজেট’ অ্যাপ।
টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিজেদের আর্থিক আয়ে প্রভাবের পাশাপাশি বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে লড়াইয়ের কারণে ২০২২ সাল বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল অ্যাপ স্টোরের জন্য। দক্ষিণ কোরিয়া ও নেদারল্যান্ডস’সহ বিভিন্ন দেশের অ্যাপ নির্মাতার অ্যাপ কেনায় থার্ড-পার্টি সিস্টেম ব্যবহারের অনুমোদন দিতে বাধ্য হয় তারা।
বিভিন্ন অ্যাপস্টোরের একচেটিয়া অ্যাপ সরবরাহ ব্যবস্থার ‘লাগাম টেনে ধরার’ বিভিন্ন উপায় খুঁজছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ, যা অ্যাপ স্টোরের অ্যাপ সরবরাহ ও আর্থিক ফি দেওয়ার কয়েকটি নিয়ম শিথিলে বাধ্য করতে পারে অ্যাপলকে।
শিল্প তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অ্যাপ স্টোরের নেট আয় কমেছে পাঁচ শতাংশ। এমনকি ডলারের বিপরীতে বিভিন্ন মুদ্রার দাম ওঠানামা করায় এশিয়া ও ইউরোপের একাধিক দেশে অ্যাপ স্টোরের দাম বাড়াতে বাধ্য হয় অ্যাপল।