।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে প্রায় ৪০ বছর থেকে রিক্সা চালিয়ে ঘাম ঝড়িয়ে সংসার চালান জহুরুল। ৬ শতকের বাড়িটিই তাঁর ঠিকানা। আবাদি জমি ১শতকও নেই। ঘুম ভাঙ্গে সংসার চলবে কিভাবে আর সেই ঘুমের সঙ্গে থাকে কিভাবে সন্তান মানুষ হবে। তিন সন্তানের জনক জহুরুল বড় দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন রিক্সা চালিয়েই। এই অভাব ও সংকটের সাথে সংগ্রাম করা রিক্সা চালক জহুরুলের পুত্র আল আমিন অলি হোসেন ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষায় উলিপুর এমএস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ – ৫ পেয়েছে। রিক্সা চালক পিতা স্বপ্ন দেখছেন দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করে মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠুক। এদিকে সন্তান আল আমিন অলি হোসেনও স্বপ্ন দেখছেন পড়া-লেখা শেষ করে পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের মুখে হাসি ফুটাবেন। জহুরুলের সংসার চলে রিক্সা চালিয়ে এবং তাঁর স্ত্রী উলিপুরে কারু পণ্য নামের একটি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানে মাসিক ৩ হাজার টাকার চুক্তিতে কাজ করে। এই কাজের বিনিময় মাসের শেষে যা পায় তা দিয়ে সন্তানের পড়া-লেখার খরচ বহন করা ওই পিতা-মাতার পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে। জহুরুল দুঃখ কষ্ট করে সংসার চালালেও এ সময় এসে কিছুটা নির্বিকার। তবুও আশা করছেন সন্তানের পড়া-লেখা শেষ না পর্যন্ত একটি বৃত্তির ব্যবস্থা কেউ করলে মন্দ হয় না।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাতে অলি হোসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি জ্বীর্ণ রুমে তার পড়-লেখা করার টেবিল, এলোমেলো বই-খাতা। সে সময় কথা হয় অলি হসেনের সাথে। অলি জানায়, আমি সকল বিষয়ে জিপিএ – ৫ পেয়েছি আমার একান্ত চেষ্টা থেকে। পিতা রিক্সা চালালেও এবং আমার মা গার্মেন্টস কর্মী হলেও আমি আমার পিতা-মাতার বাধ্য সন্তান। আমার পিতা-মাতা যেভাবে আমার কাছে আশা করছিলেন আমি চেষ্টা করেছি মাত্র। শিক্ষকদের কুর্ণিশ করে অলি হোসেন জানায়, আমার শিক্ষা জীবনের সকল স্যারদের দোআ ও আর্শ্বিাদে এইটুকু পথ পাড়ি দিয়েছি, সামনে এর থেকেও বড় পথ আছে আমি সকলের কাছে দোআ ও আর্শ্বিাদ কামনা করছি যেনো সেই পথগুলোও সঠিকভাবে পাড়ি দিতে পাড়ি। অলি হোসানের বাবা-মা সন্তানের জন্য দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করে বলেন, খুব কস্ট করে আমরা আমাদের সন্তানটিকে তৈরি করার চেষ্টা করছি।