।। ডা. এ.টি.এম আব্দুর রাজ্জাক ।।
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল গত সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলের হরিষে-বিষাদ শেষে এখন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে বড় প্রশ্ন, এরপর কি করব? কোন পথে আগালে স্বপ্ন ছোঁয়া যাবে? এখনই সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কারণ এ সিদ্ধান্তের উপর অনেককিছু নির্ভর করবে।
এই প্রশ্নের সহজ কোনো উত্তর দেয়া যায় না। তবে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি জিপিএ ৪.০০ পয়েন্ট বা তার কম যারা পেয়েছে তাদের জন্য সাধারণ শিক্ষার দিকে না যাওয়া ভালো। যারা সব বিষয়ে জিপিএ ৫.০০ পেয়েছে এবং স্বচ্ছল পরিবারের তারা সাধারণ শিক্ষার দীর্ঘ পথে পা বাড়াতে পারে।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্যমতে বাংলাদেশে ৪৭ শতাংশ স্নাতক পাস শিক্ষার্থী বেকার। বিশ্বে সর্বাধিক বেকারত্বের দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২তম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ব্যাপকভাবে কারিগরি শিক্ষার দিকে অগ্রসর হতে হবে। দেশে কারিগরি শিক্ষার হার বর্তমানে মাত্র ১৪% যা আগামী ২০৩০ সালে ৩০% এবং ২০৪০ সালে ৪০% করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে এসএসসি/সমমান পাস শিক্ষার্থীদের জন্য ৩-৪ বছর মেয়াদি বিভিন্ন বিষয়ে লেখাপড়া শেষে দেশে-বিদেশে সরকারি বা বেসরকারি চাকরিতে তুলনামূলক সহজ সুযোগ রয়েছে।
দেশে সরকারি পলিটেকনিক ৪৯টি (১১ ধরনের ডিপ্লোমা কোর্স রয়েছে), আইএইচটি ৮টি (প্যাথলজি ও এক্সরে টেকনোলজিস্ট), ম্যাটস ১১টি (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট), নার্সিং ইন্সটিটিউট ৪৩টি ও মিডওয়াইফারি ৩৮টি রয়েছে। এছাড়াও ভেটে্রিনারি, ফরেস্ট্রি, গ্ল্যাস এন্ড সিরামিক,লেদার, ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি সহ আরও অনেক বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
একজন শিক্ষার্থীর নিজ আগ্রহে এসব বিষয়ে এখনই খোঁজ নেয়া শুরু করতে হবে। অনেকেই এটাকে অবজ্ঞার চোখে দেখবে। সেসব আমলে না নিয়ে ভালো লাগার বিষয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির চেষ্টা করতে হবে। পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হতে পারলে নিজেকে একজন দক্ষ মানুষে পরিণত করা সহজ হবে। আমার জানা মতে সৎ, দক্ষ ও পরিশ্রমী মানুষের কাজের অভাব হয় না।
লেখকঃ ডা. এ.টি.এম আব্দুর রাজ্জাক, অর্থোপেডিক এবং স্পাইন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সার্জন
সাবেক বিভাগীয় প্রধান, সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড (সিআরপি)।