।। নিউজ ডেস্ক ।।
উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রাম জেলার মানুষের প্রধান আয়ের উৎস কৃষিখাত। এবার ঘন বৃষ্টি ও দফায় দফায় বন্যায় আমন চাষাবাদ বিলম্বিত হলেও আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। এতে কৃষিখাতে এসেছে যেমন ফসলের ভিন্নতা তেমনি কৃষকরা হচ্ছেন লাভবান।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৭১০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে শীঘ্রই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছেন তারা। জেলার সর্বত্র কৃষি বিভাগের নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ অব্যাহত রয়েছে। গতবছরের চেয়ে এ মৌসুমে শাক-সবজির বাম্পার ফলন দেখা যাচ্ছে।
বর্তমানে লাউ, শিম, পটল, কুমড়া, টমেটো, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, পেপে, করলাসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির চাষ হচ্ছে। অনেক জমি থেকে শাক-সবজির উৎপাদন শুরু হয়েছে। দিনে দিনে শাক-সবজি চাষাবাদের জমির পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
উলিপুরের পান্ডুল ইউনিয়নের ঝাড়ডাঙ্গা গ্রামের নুর আমিন জানান, ৩বিঘা জমিতে শীতকালীন সবজি লাগিয়েছি। এর মধ্যে ২ বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছি। একমাস থেকে লাউ বিক্রি করছি। ফলন অনেক ভাল হয়েছে। বাজারে দামও ভাল পাচ্ছি। অবশিষ্ট জমিতে শাক চাষ করেছি। শাক বিক্রি প্রায় শেষের দিকে।
কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের কালোয়া গ্রামের পরেশ চন্দ্র জানান, ৫ বিঘা জমিতে লালশাক ও মুলাশাক আবাদ করেছি। আগাম চাষ করায় সবজি বেশি দামে বিক্রি করছি। এতে লাভ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
সদর উপজেলার কাঁঠাল বাড়ি ইউনিয়নের সবজি ব্যবসায়ী হামেদ আলী জানান, ৫ বিঘা জমির মুলাখেত, ৩ বিঘা জমির লাউখেত এবং ২ বিঘা জমির লালশাক কৃষকের নিকট থেকে চুক্তিতে অগ্রিম ক্রয় করে নিয়েছি। আমার টাকা নিয়ে সেসব কৃষক আবারও সবজি চাষ করছেন।
রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের মহিধর এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এবারে মোট ১৭ বিঘা জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করছি। ৩ বিঘা জমিতে বেগুন, ৩ বিঘা জমিতে লাউ, ২ বিঘা জমিতে পালংশাক, ৪ বিঘা জমির করলা, ২ বিঘা জমিতে শসা ও ৩ বিঘা জমিতে কুমড়া লাগিয়েছি। এরমধ্যে লাউ, করলা ও শসা বিক্রি করা শুরু করেছি। আর অল্পদিন পরই অন্যান্য সবজি বিক্রি করতে পারবো। আশাকরছি এবার অনেক লাভের মুখ দেখতে পারবো।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, ‘ জেলায় ৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৭১০ হেক্টর জমিতে শাক-সবজির উৎপাদন শুরু হয়েছে। আশাকরছি আর কিছুদিনের মধ্যে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। সবজির আবাদ নিয়ে আমরা আশাবাদী। কৃষকদের পরামর্শ ও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।