।। নিউজ ডেস্ক ।।
স্যাটেলাইটের এ যুগে আকাশ সংস্কৃতি আর পৃষ্টপোষকতার অভাবে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে লোকবাদ্যের দেশীয় বাদ্য ‘দোতরা’। সেখানে জায়গা নিচ্ছে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র। এতে নতুন প্রজন্ম যেমন নিজেদের লোকজ সংস্কৃতি ভুলে এসব চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি বাংলার প্রাণের গান হারাচ্ছে নিজস্বতা। ভাওয়াইয়া বা বাউল গানের আসর, সাধু সংঘ কিংবা যাত্রাপালা কোথাও আর আজ কাল চোখে পড়েনা দেশীয় সংস্কৃতির দেশীয় বাদ্য ‘দোতরা’।
একতারা, দোতরা, সারিন্দা, খমক বাদ্য এখন শুধু বইয়েই। এক সময় গ্রাম-গঞ্জের পালাগান, ভাওয়াইয়া, যাত্রাপালা কিংবা বাউল গানের আসরে ছন্দ দিতো এসব দেশীয় বাদ্য।
এরপরেও নানা প্রতিকূলতায় এসব যন্ত্র এখনো কোথাও স্ব যত্নে রেখেছেন কেউ কেউ । তেমনি তিনজন বাদ্যশিল্পী হলেন রাজারহাটের বৈদ্যের বাজারের শ্রী গান্ধার রায়, শ্রী গোপেন্দ্র ভূষণ রায় ও শ্রী নিরাশা চন্দ্র রায়। নিজেদের কীর্তন ও সাধু সংঘে মাঝে মধ্যে বাজান এই দেশীয় বাদ্যটি। সরকারিভাবে দেশীয় সংস্কৃত রক্ষার্থে দোতরা বাদ্যকে আলাদাভাবে পৃষ্টপোষকতা করলে এই শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখা যাবে বলে মনে করেন এ দুজন বাদ্যশিল্পী। নিজেদের এলাকায় আশ-পাশে কোন অনুষ্ঠান হলে স্ব-যত্নে পরম আনন্দে বাজান দোতরা। তবে দিন দিন যন্ত্রটির ব্যবহার কমে যাওয়ায় হতাশ এসব দোতরার বাদ্য শিল্পীরা।
বাদ্যশিল্পী গান্ধার রায় বলেন,‘আমি শখের বশে দোতরার ব্যবহার শিখেছি। যদিও আজ-কাল এখন এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। তবে সরকারি পৃষ্টপোষকতা বাড়ালে এই যন্ত্র সংগীতের ব্যবহান আরো বাড়বে।’
আরেক বাদ্যশিল্পী শ্রী নিরাশা চন্দ্র রায় বলেন, ‘আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার বেশি হওয়াতে দোতরা যন্ত্রটি এখন আর ব্যবহার হয়না। এজন্য ৩ বছর হলো দোতরা বাজানো আমি বাদ দিয়েছি।’
কুড়িগ্রামের সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ এর সভাপতি জুলকারনাইন স্বপন বলেন,‘দোতরা একটি প্রাচীন ব্যাঞ্চনাময় যন্ত্র সংগীত। যা বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রের ভারে হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো চাইলেই আবারো দোতরা যন্ত্রটির ব্যবহার ফিরিয়ে আনলে প্রাচীন এই ঐতিহ্যটিকে ধরে রাখা সম্ভব হবে।’