।। নিউজ ডেস্ক ।।
দীর্ঘ ১০ বছর পর উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২৩ অক্টোবর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্মেলনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে দলের অভ্যন্তরে পরিবেশ ততই উত্তপ্ত হচ্ছে।
দীর্ঘ ১০ বছর পর উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২৩ অক্টোবর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্মেলনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে দলের অভ্যন্তরে পরিবেশ ততই উত্তপ্ত হচ্ছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিনের নেতৃত্বে একাংশ এবং দলের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টুর নেতৃত্বে অপর অংশ কার্যত এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। উপজেলা থেকে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি পর্যন্ত উপদলীয় কোন্দল বিস্তৃত হয়েছে। এতে করে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের নেতৃত্বে আসা নিয়ে কর্মীদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি মাসের ৮ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ওপর হামলা এবং দলীয় নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে স্থানীয়রা আশংকা করছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের উপর সন্ত্রাসী হামলার জন্য দলের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিনকে পরোক্ষভাবে দায়ী করেছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ। বরং দীর্ঘদিন ধরে চলা দলের ভিতর তার সেচ্ছাচারিতা নানা অপকর্মসহ দুর্নীতি আড়াল করতে তিনি নাটক সাজিয়েছেন। এদিকে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যে শেষ পর্যন্ত নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপর মহলের চাপিয়ে দেয়া কমিটি দায়িত্ব পাবে নাকি দলের কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাদের নির্বাচন করা হবে এনিয়ে কর্মীদের মাঝে সংশয় দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির একাধিক কাউন্সিলর বলেন দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের নেতৃত্বে বসানোর ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের বিকল্প নেই। চাপিয়ে দেওয়া কমিটি দলের বিপর্যয় ডেকে আনবে। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১৪ অক্টোবর পুলিশ পাহারায় উপজেলা অডিটরিয়াম হল রুমে দলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দলের দপ্তর সম্পাদক নিমাই সিংহ বলেন, ইতি পূর্বে চারটি ইউনিয়ন সম্পর্কে আপত্তি উঠলে তা জেলা কমিটি কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এবার ১৩টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভা ও উপজেলা কমিটি মিলে মোট ৫০৩ জন কাউন্সিলরের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে। যেখানে সভাপতি হিসাবে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যক্ষ আহসান হাবীব রানা, সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ হাড়ি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা, সাবেক সভাপতি মতি শিউলী এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ সরকার।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক মনজুরুল সরদার বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাজাদুর রহমান তালুকদার সাজু, পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব মামুন সরকার মিঠু, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম সুজা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক স. ম. আল মামুন সবুজ।
দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, ইতিমধ্যে ২৩ অক্টোবর সম্মেলন সফল করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে চিঠি দেয়া হচ্ছে। কোন ষড়যন্ত্রই সম্মেলন বানচাল করতে পারবে না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মতি শিউলী বলেন, একটি মহল তৃণমূলের ভোটে জিততে পারবেনা হেতু ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছেন। আমি চাই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তৃণমূলের ভোটে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোক। তারপরও দলের উপর থেকে যাহা সিদ্ধান্ত দেবে আমরা সেটাই মেনে নেবো।
//নিউজ//উলিপুর//মালেক/অক্টোবর/২০/২২