।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে ৩ বছর অতিবাহিত হলেও গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচি প্রকল্পের দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ না করে টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে প্রভাবশালী ও সাবেক ইউপি সদস্যের চাকুরীজীবী পুত্রের নামে ঘর নির্মাণ করার খবর এলাকায় জানাজানি হলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৭২টি গৃহহীন পরিবারের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ধরা হয় ২ কোটি ১৫ লাখ ৮৯ হাজার ৯’শ ২০ টাকা। একটি রান্না ঘর ও একটি বাথরুমসহ ২কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি সেমি পাকা টিনসেড ঘরের ব্যয় ধরা হয় ২ লাখ ৯৯ হাজার ৮’শ ৬০ টাকা। এরমধ্যে থেতরাই ইউনিয়নে ৪টি, দলদলিয়ায় ৬টি, দুগার্পুরে ৭টি, পান্ডুলে ৮টি, বুড়াবুড়িতে ৩টি, ধরণীবাড়ীতে ১০টি, ধামশ্রেনীতে ৪টি, গুনাইগাছে ৬টি, বজরায় ৫টি, হাতিয়ায় ৮টি, তবকপুরে ৭টি, বেগমগঞ্জে ২টি ও সাহেবের আলগায় ২টি ঘর। কিন্তু ঘর গুলো নির্মাণ করা হয় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে। ওই সময় তবকপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও বামনাছড়া বালাপাড়া এলাকার প্রভাবশালী আব্দুর রাজ্জাকের চাকরিজীবি পুত্র মোশারফ হোসেন (ক্রমিক নং-৬৮) এর নামে ঘর নির্মাণ করা হয়। ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াদুদ হোসেন মুকুল, প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সমঝোতা করে এ কাজটি করেন।
সরেজমিনে সুবিধাভোগি মোশারফ হোসেনের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এসময় তার পিতা সাবেক ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের সাথে কথা হলে তিনি রিপোর্টটি না করার জন্য অনুরোধ করেন।
তবকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কাজটি আমার সময়ে না, আগের চেয়ারম্যানের সময়। এ বিষয়ে আমি কোন কিছু জানা নেই। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াদুদ হোসেন মুকুলের সাথে কথা হলে তিনি ঘর নির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ধামশ্রেনী ইউনিয়নের বড়াইবাড়ী গ্রামের আব্দুল গফুরের পুত্র মুরগী ব্যবসায়ী হোসেন আলীর (ক্রমিক নং-৩৯) নামে ঘর বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু ঘর বরাদ্দের সম্পূর্ন টাকা চেকের মাধ্যমে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রাখিবুল হাসান সরদার উত্তোলন টাকা করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩বছর পার হলেও আজবধি ঘরটি নির্মাণ করা হয়নি।
তবে সরেজমিনে এ ঘরের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুরগী ব্যবসায়ী হোসেন আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ইউপি চেয়ারম্যান রাখিবুল হাসান সরদারকে ২০হাজার টাকা দিয়ে ঘর নিয়ে নিজের মতো করে কাজ করেছি।
ধামশ্রেনী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি সব সময় ওই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করি। আমার জানা মতে ওখানে কোন সরকারি ঘর নির্মাণ করা হয়নি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রাখিবুল হাসান সরদার টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি মিস্ত্রি দিয়ে ওখানে ঘরের কাজ করে দিয়েছি।
প্রকল্পের সদস্য সচিব ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদৌলা বলেন, এ রকম হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কাজ বুঝে নিয়ে চেয়ারম্যানদেরকে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন রাংসা বলেন, বিষয়টি আমার যোগদানের আগে। ফাইল না দেখে কোন কিছু বলতে পারবো না।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/অক্টোবর/১৯/২২