।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
ভার্চুয়াল লাইফ আমাদের স্বাভাবিক জীবনের সঙ্গে যেমন জড়িয়ে গিয়েছে, তেমনি হয়েছে আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর দেশে এক মূল্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও মেয়াদহীন ডাটা প্যাকেজ চালু হয়েছে। ফলে বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা। এটি যেমন আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে ঠিক তেমনি জড়িয়েছে আমাদের সমাজ ও পরিবারের শিশু-কিশোরদের জীবনেও। কিন্তু ইন্টারনেটে আমরা সবাই কি নিরাপদ? মোটেও তা নয়।
প্রযুক্তি ব্যবহারে দায়িত্বশীলতা, সৃজনশীলতা ও নিরাপদ থাকা জরুরি। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার খুব যে কঠিন তা কিন্তু নয়। সাইবার হামলাকারীদের থেকে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য ও ডিভাইস রক্ষা করে প্রয়োজনীয় কনটেন্ট ব্যবহার করাই মূলত নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার।
অনলাইন শিশু-কিশোরদের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিরাপদ সাইবার স্পেসের জন্য প্রযুক্তিবিদরা বলেন, বাচ্চাদেরকে শুধু অনলাইনে না, তাদের জীবনের প্রতিটা দিকে নিরাপদে রাখার প্রধান উপায় হচ্ছে বাবা-মার সঙ্গে সন্তানের ভালো সম্পর্ক। পরবর্তীতে যে দিকটি লক্ষ্য রাখতে হবে- আপনার সন্তান অনলাইনে বা অফলাইনে কাদের সঙ্গে মিশছে সেটার খোঁজ রাখা। তৃতীয়ত, অনলাইন নিরাপত্তা, অনলাইনের ক্ষতিকর ও ভয়ঙ্কর দিকগুলো সম্পর্কে সতর্ক করতে হবে।
অনলাইনে শিশু-কিশোরদের নিরাপত্তায় করণীয়-
ইন্টারনেট সংযোগ: ওয়াইফাই রাউটার প্যারেন্টস কন্ট্রোল যেমন ডাটা ইউজ লিমিট করে দেয়া। সন্দেহের তালিকায় থাকা বা শিশুদের জন্য ক্ষতিকর এমন ওয়েবসাইটগুলো ব্লক করে দেয়া এবং গুগোল ওয়াইফাই অ্যাপের মাধ্যমে ফোন দিয়ে আমরা সহজেই শিশুদের ওয়াইফাই ইউজ শিডিউল করে দিতে পারি। বাচ্চাদের ডিভাইসটি ওপেন নেটওয়ার্ক বা ফ্রি ওয়াই-ফাইতে কানেক্ট করাবেন না বা করতে দিবেন না। আপনার হোম ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক সিকিউর রাখুন।
ইন্টারনেট ব্রাউজিং: বিশেষ করে ইউটিউব ব্যবহারে সতর্ক হন। কারণ ইউটিউবে এমন অনেক ভিডিও আছে যেগুলো দেখলে বাচ্চারা মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। তাই বাচ্চাদের জন্য ব্যবহার করুন “ইউটিউব ফর কিডস” অ্যাপটি। বাচ্চাটি প্রতিদিন কোন বিষয়গুলো সার্চ করেছে ইন্টারনেটে তার ব্রাউজিং হিস্ট্রি চেক করুন। ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টস বা বাচ্চাদের ছবি ও পার্সোনাল ডেটা অনলাইনে শেয়ার বা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার দেয়া থেকে বিরত থাকুন। নিজের লোকেশন শেয়ার না করাই ভালো, আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একদমই না। কোন লিংক বা অ্যাডে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
গুগল কন্ট্রোল: গুগোল প্লে প্যারেন্টস কন্ট্রোলটি ব্যবহার করতে পারেন, এতে করে আপনার সন্তান কি করছে, কি অ্যাপ ইন্সটল করছে এছাড়াও মুভি, টিভি শো, বই, গান এসবে কন্ট্রোল করতে পারবেন। এছাড়াও গুগোল ফ্যামিলি লিংক অ্যাপসের মাধ্যমে আপনার শিশুর লোকেশন, কোন অ্যাপ কতটুকু বা কতক্ষণ ব্যবহার করছে দেখতে পারবেন, স্ক্রিন টাইম সেট করতে পারবেন ও আরও অনেক সুবিধা পাবেন এই অ্যাপটির মাধ্যমে। এমন আরও অনেক সফটওয়্যার বা অ্যাপস রয়েছে।
শিশুর খেয়াল রাখা: অনলাইনে কিভাবে সুরক্ষিত থাকা যায় তাদের শিখান ও বুঝান এর গুরুত্ব। আপনার শিশুর ব্যবহারের পরিবর্তনের দিকে খেয়াল রাখুন। কৌশলে তাদের সঙ্গে নিয়ে তাদের ডিভাইস দিয়ে অনলাইনে বসুন ও তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। “অপরিচিত কারো সঙ্গে অনলাইনে কথা বলা যাবে না” উদাহরণ দিয়ে বুঝান। অনলাইনের খারাপ দিন ও ক্ষতিকর জিনিস যেমন ম্যালওয়ারের ব্যাপারে সতর্ক করুন। আপনার সন্তান আপনাকে কী বলতে চায় ধৈর্য ধরে শুনুন।