।। নিউজ ডেস্ক ।।
ভূরুঙ্গামারীতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় প্রধান আসামী ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বিজ্ঞ আদালত। এসময় অন্যান্য আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় কুড়িগ্রামের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভূরুঙ্গামারী আদালতের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন আলী’র আদালতে আসামীদের জামিন ও রিমান্ডের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে এই আদেশ দেন তিনি।
এরআগে ২২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারকৃত ৬আসামীর পক্ষে এই আদালতে জামিন ও রিমান্ডের আবদন চাওয়া হয়। পরে আদালত আজ ২৯ সেপ্টেম্বর উভয় বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় এ পর্যন্ত ৫জন শিক্ষক এবং একজন অফিস সহায়ককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূল হোতা প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান, ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল, ইসলাম শিক্ষা শিক্ষক জোবায়ের হোসেন, কৃষি বিজ্ঞানের শিক্ষক হামিদুর রহমান, বাংলা বিষয়ের শিক্ষক সোহেল আল মামুন এবং অফিস সহায়ক সুজন মিয়া। এজাহার নামীয় আসামী অফিস সহকারী আবু হানিফ পলাতক রয়েছে। এদের সবাইকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি।
উল্লেখ্য, বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা ১০/১২ জনের নামে ভূরুঙ্গামারী থানায় মামলা করেন নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী। এ ঘটনায় গণিত, পদার্থ, রসায়ন ও কৃষি বিজ্ঞানের পরীক্ষা স্থগিত ও উচ্চতর গণিত এবং জীব বিজ্ঞানের প্র্রশ্নপত্র পরিবর্তন করে পরীক্ষা গ্রহন করা হয়েছে।
ভূরুঙ্গামারী থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আজাহার আলী জানান, ২২ সেপ্টেম্বর মামলার মূল হোতা প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানের ৩দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। এসময় আদালত আজকে রিমান্ড শুনানীর দিন ধার্য করেন। শুনানী শেষে লুৎফর রহমানের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই ঘটনার সাথে আরও কারা জড়িত রয়েছেন তাদের তথ্য উদঘাটন করে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও নতুন করে শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল এবং ইসলাম শিক্ষা শিক্ষক জোবায়ের হোসেনের বিরুদ্ধে ৩দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক আগামী ২অক্টোবর শুনানীর দিন ধার্য করেন। মামলার এজাহারভুক্ত নামীয় আসামী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক আবু হানিফ পলাতক রয়েছে। তাকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দিলরুবা আহমেদ শিখা জানান, আসামীরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটিয়ে দেশ ও জাতির ক্ষতি সাধন করেছেন। এই ঘটনার নেপথ্যে যারা সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদের খুঁজে বের করতে আটককৃতদের রিমান্ডের প্রয়োজন ছিল। আসামী পক্ষের আইনজীবীগণ জামিন আবেদন করলে আদালত তা না-মঞ্জুর করেন। মামলার মূল হোতা লুৎফর রহমানের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন এবং শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল এবং জোবায়ের হোসেনের ৩দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আগামী রবিবার।
আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এটিএম এনামুল হক চৌধুরী চাঁদ, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল হক সরকার আলো এবং অ্যাডভোকেট আমির উদ্দিনসহ ১০জন আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট আমির উদ্দিন জানান, বিজ্ঞ আদালতের কাছে আসামীদের জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন না-মঞ্জুর করেন এবং লুৎফর রহমানের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।