।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে দুর্গা পূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। দূর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা বাড়লেও প্রতিমার সঠিক দাম না পাওয়া আর পূজার সংখ্যা কমানোর প্রভাবে খুশি নন এই সম্প্রদায়ের কারিগররা।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কুড়িগ্রাম জেলা শহরের বেশ কয়েকটি পাল পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, এবারের দূর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা কারিগররা পার করছেন ব্যস্ত সময়। একেক জন কারিগর ৮-১২ টি করে প্রতিমার অর্ডার নিয়েছেন। যা বিগত বছরগুলোতে ছিলো ১৬-২০টি করে। জেলার বাইরে থেকে প্রতিমার অর্ডার পেলেও গত দুই বছর থেকে করোনার প্রভাবে সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে।
তবে লাভ কম হলেও উৎসব কমিটির পছন্দের চাহিদা মত তারা প্রতিমা গড়ছেন আপন হাতের ছোয়ায়। পাশাপাশি পুজোর মাটির সরঞ্জাম হাড়ি, কলস, ঘট, সরা, প্রদীপ, ধূপাতি ইত্যাদিও গড়ছেন কারিগররা। জেলার কাঁঠালবাড়ি, দাশেরহাট, বৈদ্যের বাজার, ঘোগাদহ, পালপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় তৈরী হচ্ছে এসব মাটির সরঞ্জাম ও দূর্গা প্রতিমা।
প্রতিমা তৈরীতে ক্ষ্যাত রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের বৈদ্দের-বাজার এলাকার প্রতিমা কারিগর তপন চন্দ্র মালাকার বলেন, ‘বাপ-দাদার পেশা আকড়ে ধরে আছি। মৃৎশিল্পীদের কেউ খোঁজ খবর নেয় না। প্রতি বছর দূর্গা উৎসব আসলে কয়টা টাকার মূখ দেখি। এ বছর ৯ টি প্রতিমা তৈরী করছি। সঠিক সময়ে প্রতিমা ডেলিভারী দিতে স্ত্রী-সন্তান ও দুই-তিন জন স্থানীয় শ্রমিক নিয়ে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে।’
সদরের কাঁঠালবাড়ির প্রতিমা কারিগর শ্রী কালিকান্ত পাল বলেন, ‘গত দুই বছর করোনার কারনে জেলার বাইরের পুজোর প্রতিমার তেমন অর্ডার নিতে পারি নি, এ বছর আশানুরুপ প্রতিমার অর্ডার বেশি আশা করেছিলাম। কিন্তু এ বছর জেলায় পূজা মন্ডপের সংখ্যা কমায় অর্ডার কম পেয়েছি।’
একই এলাকার আরেক প্রতিমা কারিগর শ্রী সুশিল পাল বলেন, ‘প্রতিমার সরঞ্জামের দাম গতবছরের চেয়ে এবছর আরো বেড়েছে,সেই তুলনায় প্রতিমার দাম তেমন পাচ্ছি না আমরা।’
প্রতিমার লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, ময়ূর, পেঁচা সবকিছু তৈরী শেষ হয়েছে, তবে মুল প্রতিমা দেবী দূর্গার কাজ এখনো বাকি রয়েছে। এসব প্রতিমা গুলোতে এখনো মাটির প্রলেপ দেয়া হচ্ছে, রং তুলির আচর পরবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার পর। ৫ দিনের এই শারদ উৎসব শুরু হবে আগামী ১ লা অক্টোবর শনিবার থেকে।
কুড়িগ্রাম পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্যমতে, জেলায় এবার ৫১৪টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয়া দূর্গোৎসব। যা গতবছরের চেয়ে ৬০ টি মন্ডপের কম পূজা এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৫১৪টি মন্ডপগুলো হলো, কুড়িগ্রাম সদরে ৭২টি, রাজারহাটে ১১২টি, ফুলবাড়িতে ৬৩টি, উলিপুরে ১১৮টি, চিলমারীতে ৩২ টি, রৌমারীতে ৮টি, রাজিবপুরে ১টি, নাগেশ্বরীতে ৯০টি, ভূরুঙ্গামারীতে ১৮টি মন্ডবে পূজা হবে।
কুড়িগ্রাম পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রবি বোস বলেন, ‘গত বছর কয়েকটি জায়গায় দূর্গা পূজার সময় প্রতিমা ভাংচুর করা হয়। সেই আশংকায় কেন্দ্রীয় নির্দেশে এবার আমাদের কুড়িগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপগুলোর পূজা অনুষ্ঠিত হবে না।’