।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে অপরিকল্পিতভাবে ২৩বছর আগে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্লুইস গেটটি বর্তমানে কোন কাজে আসছে না। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় তা ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিস্তার ভাঙ্গনে বুড়িতিস্তা নদীর উৎস মুখে নির্মিত স্লুইস গেটটি নদী গর্ভে চলে যায়। পরে পাউবো কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিত ভাবে বুড়িতিস্তা নদীর মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ দিয়ে বন্ধ করে দেয়। অপর অংশের থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার নামক স্থানে নতুন করে স্লুইস গেটটি নির্মান করে। ইতিমধ্যে স্লুইস গেটের অনেক যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। কিন্তু পাউবো কর্তৃপক্ষের নজরদারী ও সংস্কারের অভাবে বর্তমানে স্লুইস গেটটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, তিস্তার নদীর ভাঙ্গনে বুড়িতিস্তা নদীর উৎসমূখে নির্মিত স্লুইজ গেটটি নদী গর্ভে চলে গেলে বুড়িতিস্তা নদীর এক পার্শ্বে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মান করে তা বন্ধ করেন দেয়া হয়। অপর অংশে ১৯৯৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিতভাবে উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার নামক স্থানে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৪ গেট বিশিষ্ট একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করেন। কিন্তু নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যে ২৪ টি গেটের ১৬ টি অকেজো হয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে সব গেট গুলোর ছোট পেনিয়াম, শেপ, ৭টি গেটের বড় পেনিয়াম কভার, ৪টি গেটের বড় পেনিয়াম এবং অনেক গেটের নাট-বোল্ড চুরি হয়ে গেছে।
এদিকে স্লুইস গেটের উৎসমূখে তিস্তা নদী থেকে পলি মাটি জমে তা ভরাট হয়ে যাওয়ায় কোন দিক থেকেই পানি নিষ্কাশন হয় না। এ পরিস্থিতিতে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে বুড়িতিস্তা নদীর দক্ষিন অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে বুড়িতিস্তা নদীর দুই পাড়ের কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি ও শত শত পরিবারকে দূর্ভোগ পোহাতে হয়।
বুড়িতিস্তা নদীর প্রায় ২২ কিলোমিটার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়ন থেকে চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ পর্যন্ত ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেললে নদী দখল করে নেন দখলদার। সম্প্রতি উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের অর্জুনে স্লুইস গেট নির্মাণসহ চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল পর্যন্ত বুড়িতিস্তা নদী খনন ও দখলমুক্ত করার জন্য উলিপুর প্রেসক্লাব ও রেল, নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি আন্দোলন শুরু করেন। এরই প্রেক্ষিতে সরকার বুড়িতিস্তা খননের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু দক্ষিন অংশের দলদলিয়া ইউনিয়নের দেবত্তর থেকে নাজিমখাঁন পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার খনন না করায় এ অঞ্চলের মানুষকে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দেবত্তর গ্রামের আব্দুল জলিল, মজিদ মিয়া, সাহেব আলীসহ অনেকেই জানান,বর্তমানে স্লুইস গেটটি সংস্কারসহ দক্ষিন অংশের বুড়িতিস্তা খনন ও সম্মুখভাগে পলি অপসারন না করলে এ অঞ্চলের মানুষকে আরো দূর্ভোগ পোহাতে হবে।
স্লুইস গেটের দায়িত্বে থাকা গেটম্যান আব্দুল বাতেন জানান, ২৪টি গেটের ৮টি গেট কোন রকমে চলে। বাকি ১৬টি গেট সংস্কার করে পানি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা না করলে স্লুইস গেট মানুষের কোন কাজে আসবে না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, স্লুইস গেট সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই গেট গুলো সংস্কার করে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করা হবে। দলদলিয়া ইউনিয়নের দেবত্তর থেকে নাজিমখাঁন পর্যন্ত খনন করার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/সেপ্টেম্বর/১২/২২