।। টেক ডেস্ক ।।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে হয়রানি করার নামই সাইবার বুলিয়িং। এটি সামাজিক মিডিয়া, মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম, গেমিং প্ল্যাটফর্ম এবং মোবাইল ফোনে ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে যাদেরকে টার্গেট করা হয় তাদেরকে ভয় দেখানো, রাগিয়ে দেওয়া, লজ্জা দেওয়া বা বিব্রত করার জন্য বার বার এরূপ আচরণ করা হয়।
সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে একজন ভুক্তভোগী সিআইডির সাইবার পুলিশে যেতে পারেন বা ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটেও যেতে পারেন। জরুরি পুলিশ সেবার জন্য ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস ৯৯৯–এ ফোন করতে পারবেন।
ইউনিসেফের এক জরিপ অনুযায়ী, সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়া ৩৮ শতাংশ মানুষের বয়স ১০-১৩ বছর, ৩৬ শতাংশের বয়স ১৪-১৫ বছর এবং ২৫ শতাংশের বয়স ১৬-১৭ বছর। ঢাকায় অনলাইনে হয়রানির শিকার নারীদের ৭০ শতাংশের বয়স ১৫-২৫ বছরের মধ্যে, বাংলাদেশসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশের ওপর চালানো এক জরিপের বরাত দিয়ে ২০১৭ সালে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়- এসব দেশে সাইবার বুলিংয়ের ঝুঁকি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এবং নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীরা সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছে বুলিংয়ের।
করণীয়ঃ
➤ সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে প্রথমে নিজেকে বোঝাতে হবে, এর জন্য আপনি দায়ী নন।
➤ সাইবার বা ডিজিটাল অপরাধের শিকার হলে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না, ভয় পাওয়া যাবে না। মাথা ঠান্ডা রেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।
➤ সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে কখনোই আপনি সাড়া দেবেন না। নিজে পাল্টা আক্রমণ করবেন না।
➤ আপনি আক্রমণের শিকার—এর পক্ষে যথাযথ প্রমাণ সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করবেন।
➤ প্রাথমিকভাবে যে বা যার দ্বারা বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন, তাকে বুঝিয়ে বলতে পারেন। আপনি না পারলে আপনার বন্ধু বা আত্মীয়কেও এই আলোচনাটুকু করতে অনুরোধ করতে পারেন।
➤ বুলিংয়ের শিকার যেহেতু নারীরা বেশি হন এবং সাধারণত তাঁরা তাঁদের সমস্যাগুলো এখনো পরিবারের সঙ্গে শেয়ার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না, তাই বুলিংয়ের শিকার হলে অবশ্যই একজন আপনজনকে জানাতে হবে।
➤ সামাজিক যোগাযোমাধ্যমের সব অ্যাকাউন্টেই ব্লক করার সুবিধা থাকে। প্রাথমিক বুলিং হলে বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অসংলগ্ন কথা বললে তাকে ব্লক করে দিতে পারেন।
এছাড়াও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে সরাসরি আইনের সাহায্য নিন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনগত সহযোগিতা দেয়- এমন প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হোন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এ ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে মিথ্যা বা অশ্লীল কিছু প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আছে। আইন লঙ্ঘন করলে ১৪ বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে। হয়রানির ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইন বা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়ে থাকে।
হয়রানির শিকার যে কেউ সরাসরি বিটিআরসিতে যোগাযোগ করতে পারেন। বিটিআরসি ফোনে ও ইমেইলে দুইভাবেই অভিযোগ গ্রহণ করে থাকে। বিটিআরসির কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্স রেসপন্স টিম এ ধরনের সমস্যায় সহায়তা করে থাকে। বিটিআরসিতে হয়রানির অভিযোগ জানাতে কল করতে পারেন (০২)৭১৬২২৭৭ নম্বরে বা ইমেইল পাঠাতে পারেন contact@csirt.gov.bd ঠিকানায়।
এ ছাড়া, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হটলাইন ১০৯২১ নম্বরে ফোন করলেও গোপনীয়তা রক্ষা করে এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা হয়।