।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে ৭’শ ৫০ টাকার এমওপি সার বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়। তবু ও মিলছে, এছাড়া অন্যান্য সারের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আমন আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে।
কৃষকরা জানায়, আষাঢ শ্রাবণ বর্ষার দু’মাস বৃষ্টির দেখা মেলেনি। চারা রোপনের সময় ও প্রায় শেষ। তাই বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে জ্বালানি কিনে সেচ দিয়ে আমন চারা রোপন শুরু করেছি। ঠিক সেই সময় সারের সংকট ও দাম বেশি হওয়ায় ঝুঁকিতে পড়েছেন তারা। কৃষি বিভাগের দাবী বাজারে সারের কোন সংকট বা বেশী দামে বিক্রি হওয়ার কোন খবর তাদের কাছে নেই। তাদের হিসাব মতে, ডিলার পর্যায়ে এখন ও মজুত রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অন্য একটি সূত্র এমওপি সারের দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে বলেন, গোড়ায় এ সারের সংকট ও মুল্য বৃদ্ধি হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলায় বিসিআইসি সার ডিলার বর্তমানে ১৪ জন ও বিএডিসি’র সার ডিলার ১৬জন থাকলে ও সব ডিলার সার উত্তোলন করেন না। হাতেগোনা কয়েকজর ডিলার সব ডিলারের সার উত্তোলন করেন। ফলে খুব সহজে তারা সার সংকট সৃষ্টি ও দাম বৃদ্ধি করতে পারেন বলে কৃষকদের অভিযোগ।
উলিপুর পৌরসভার রাজারাম ক্ষেত্রী গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, জ্বালানী তেলের পরে এবার সারের বাজারে আগুন লেগেছে। ৭’শ ৫০ টাকার এমওপি (পটাশ) সারের বস্তা (৫০ কেজি) বাজারে ১হাজার ৪’শ থেকে ১হাজার ৫’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিলারের ঘরে গিয়ে ও এমওপি সার পাওয়া যাচ্ছে না। এবার বৃষ্টির পানি না থাকায় সেচ দিয়ে চারা রোপন করে আর এক দফা সারের মুল্য বৃদ্ধি আমাদের ঝুঁকিতে ফেলেছে।
ধামশ্রেনীর ইউনিয়নের কাশিয়াগাড়ী গ্রামের কৃষক খন্দকার জাহেদুল ইসলাম সাজু জানান, আষাঢ শ্রাবণ মাসে ও বৃষ্টির দেখা মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে সেচ দিয়ে চারা রোপন করেছি। এখন আবার সারের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আমন মৌসুন নিয়ে বিপাকে পড়েছি। এত খরচ করে আবাদ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলায় ১৪ জন ডিলার রয়েছে। ডিলাররা গত জুলাই মাসের বরাদ্দ উত্তোলন করেছেন। চলতি আগষ্ট মাসের বরাদ্দ কেউ তুলেছেন কেউ এখন ও তোলেননি। জুলাই মাসের বরাদ্দ ছিল ইউরিয়া ৪’শ ৪০ মেঃ টন, টিএসপি ২৪.৫ মেঃ টন, ডিএপি ৭২.৮ মেঃ টন ও এমওপি বরাদ্দ ছিল ৬০.৯ মেঃ টন। চলতি আগষ্ট মাসে ইউরিয়ার বরাদ্ধ ছিল ৯৫৭ মেঃ টন ও অন্যান্য সারের বরাদ্দ ছিল পুর্বের মাসের সমান। চলতি মৌসুমে আমন চারা রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ২৪ হাজার ৭’শ হেক্টর। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে প্রায় ২২ হাজার ৬’শ হেক্টর। বাকীটা ও অর্জিত হওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
বাজারে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা গেছে খুচরা পর্যায়ে ইউরিয়া ১হাজার ১’শ টাকার স্থলে ১হাজার ২’শ টাকা, টিএসপি ১হাজার ১’শ টাকার স্থলে ১হাজার ২’শ টাকা, ডিএপি ৮’শ টাকার স্থলে ৯’শ টাকা ও এমওপি(পটাশ) ৮’শ ৫০ টাকার স্থলে ১৪/১৫ ’শ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বিসিআইসি সার ডিলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক জানান, আমার কাছে সব সার আছে এবং সরকার নির্ধারিত রেটে বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত ডিলারদের ঘরে পর্যাপ্ত মজুত সার রয়েছে। সারের মুল্য বৃদ্ধি কোন অভিযোগ তিনি পাননি। তবে অনেক ডিলার চলতি মাসের সার উত্তোলন করেননি। সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে মনিটরিং করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
//নিউজ/উলিপুর/মালেক/আগস্ট/২১/২২