।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
বাড়ছে অনিয়ম মুখ থুবরে পড়ছে উন্নয়ন। বিভিন্ন সড়কসহ মেরামতের কাজ এগিয়ে চললেও দুর্নীতি আর অনিয়মের ফলে আটকে যাচ্ছে উন্নয়ন কার্যক্রম। ধিরে ধিরে অনিয়মে ভরে যাচ্ছে চিলমারী। অনিয়মের সাথে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রকল্পে অভিযোগ উঠেছে লুটপাটের চলছে নয়ছয়। নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আতাআত করেই লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কাজের সাথে সংশ্লিষ্টরা। দুর্নীতি আর অনিয়মে ভরা থাকলেও অজ্ঞাত কারনে নিরব ভুমিকায় এলজিইডি।
জানা গেছে, চিলমারীতে বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কাজ শুরু হলেও নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করেই দুর্নীতি আর অনিয়মের মধ্য দিয়েই চলছে কার্যক্রম। অনিয়ম আর দুর্নীতি থেকে বাদ পড়েনি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রকল্পের বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কাজ। ২০২১-২২ অর্থ বছরে এডিপি প্রকল্পের অধিনে এলজিইডি এর অত্বাবধানে চিলমারীতে ১কোটি ১৬ লক্ষ ও বিশেষ রবাদ্দ দেয়া হয় ২০ লক্ষ টাকা। অভিযোগ উঠেছে উক্ত প্রকল্পের অধিনে বেশকিছু প্রকল্প দেখিয়ে টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কাজের সাথে সংশ্লিষ্টরা নামে মাত্র কাজ করে কর্র্তৃপক্ষের যোগসাজগে সিংহভাগ টাকাই লুটপাটে নেমেছে।
সরেজমিন চিলমারী উচ্চ বিদ্যালয় ও মুদাফৎ থানা উচ্চ বিদ্যালয়ের সংস্কার মেরামতের জন্য উক্ত প্রকল্পের অধিনে ৯লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে করা হয়েছে লুটপাট। এছাড়াও চিলমারী উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনটি ভবনে এখনো ২য় তলায় লাগানো হয়নি নিরাপত্তা গ্রিল। কাজে অনিয়ম হয়েছে স্বীকার করে চিলমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশিক ইকবাল বলেন, আমার বিদ্যালয়ে বরাদ্দের ৩০ ভাগও কাজ হয়নি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীর কথা মতাবেক আমি প্রত্যায়ন দিয়ে এখন বিপাকে পড়েছি। তবে প্রত্যায়নের বিষয় প্রধান শিক্ষকের সাথে কোন কথা হয়নি বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী। মেহেরআলী হাজির বাড়ি থেকে শিশু কল্যান বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়কে সিসি করনে বরাদ্দ দেয়া হয় ১২লক্ষ ৮হাজার টাকা। কাজটি পান মের্সাস সোমা ট্রের্ডাস। একই রাস্তায় আরো ২লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কাজটি শেষ হয় অনিয়মের মধ্য দিয়ে।
বেগম জোবেদা হাফিজিয়া বালিকা মাদ্রাসা থেকে গওছল এর বাড়ি পর্যন্ত সড়কে সিসি করনে বরাদ্দ দেয়া হয় ৮লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। কাজটি পান হামিদ মোল্লাহ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। উপজেলা পরিষদের সীমানা প্রাচীর সংস্কারের জন্য ১ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোন সংস্কার করা হয়নি। রমনা ইউনিয়নের সরকার পাড়া মোড় হতে আমিনুলের দোকান হয়ে ভুট্টুর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সিসি করণ ও প্যালাসাইডিং তৈরিতে বরাদ্দ দেয়া হয় ৩লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। কাজটি পান মের্সাস জুইজিম। জুন মাস পেড়িয়ে গেলেও সরেজমিনে কাজের কোন অস্থিত পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে সিসি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কার, মেরামত, ড্রেন, টয়লেটের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, টাকাই সবাই বিক্রি হয় ভাই, কাজ অনিয়ম দেখে বাঁধা দিতে গেলে হুমকি আর ভয়ভীতি দেখানো হয় আর অফিসে বললে ওমরা কয় শতভাগ কাজ হয়েছে তাহলে হামরা কডই যামো। তারা আরো জানান, উন্নয়ন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু অনিয়ম আর দুর্নীতি থাকায় অল্পদিনের মধ্যে উন্নয়নে ফাটল ধরে, ফলে দুর্ভোগ বৃদ্ধি পায়।
নাম প্রকাশে অনিশ্চুক কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বলেন, এসও (উপ-সহকারী প্রকৌশলী), ইঞ্জিনিয়ার (উপজেলা প্রকৌশলী)সহ টেবিলে টেবিলে টাকা না দিলে কাগজ সই হয়না তাহলে আমরা কি করবো। ঠিকাদাররা নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে মিথ্যা প্রচার করেছে বলে জানান উপজেলা প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী।
কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, কাজে অনিয়ম করার সুযোগ নেই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/জুলাই/২৭/২২