।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে পানির অভাবে কৃষকরা আমন ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। এ কারণে জমিতে সেচ দিতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ২৪ হাজার ৩’শ ৭৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত ৭’শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। বৃষ্টির পানির অভাবে ডিজেলচালিত শ্যালোইঞ্জিন ও বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে সেচের মাধ্যমে ২৪ হাজার ৩’শ ৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। আষাঢ় শেষ হয়ে শ্রাবণ মাসের ১১দিন চলে গেছে। এখন যদি প্রাকৃতিক নিয়মে বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে এবারো কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রার জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হবে না।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানি না থাকায় বেশির ভাগ জমিই পড়ে আছে। এ সময় কথা হয় উলিপুর পৌরসভার রাজারাম ক্ষেত্রী গ্রামের কৃষক আলহাজ্ব এরশাদুল হকের সাথে। তিনি বলেন, আমার ৮ একর জমির মধ্যে ৩ একর আমন ধানের চারা রোপণ করতে পেরেছি। এখন ৫ একর জমি পানির অভাবে ধানের চারা রোপণ করতে পারছি না। কিছু জমিতে বিদ্যুৎ চালিত সেচ দিয়ে চাষ করার চেষ্টা করছি। আল্লাহর রহমতে বৃষ্টির দেখা মিলছে দেখা যাক কি হয়।
নারিকেল বাড়ি এলাকার হাফিজুর রহমান, বাবলু চন্দ্র, খগেন চন্দ্রও একই কথা জানান। এছাড়া ধরনীবাড়ীর মাঝবিল, দুর্গাপুরের গোড়াই, পান্ডুলের আপুয়ার খাতা, থেতরাই এর দড়িকিশোরপর, গুনাইগাছের কৃষ্ণমঙ্গল, ধামশ্রেনীর বড়াইবাড়ী কৃষকরা জানান, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে পানি নেই। অনেক জমি পানির অভাবে ফেটে গেছে। আমরা আমনের চারা রোপণ করতে পারছিনা। আকাশে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ালেও তেমন বৃষ্টি হচ্ছে না। আর মাঝে মাঝে যে বৃষ্টি হচ্ছে তা দিয়ে মাটি ভিজে না। সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাটি তা চুষে নিচ্ছে। শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিতে গিয়ে খরচ বেশি হচ্ছে। ফলে ধান বিক্রি করেও খরচ ওঠানো যাবে না।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ উলিপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মুসাইদ মাসরুর জানান, অন্যান্য বছরে সচরাচর এ সময়ে বৃষ্টিপাত ভালো হয়। যদি বৃষ্টির পরিমাণ কম হয় তাহলে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার গভীর নলকুপ থেকে প্রয়োজন মতো পানি নিতে পারবে কৃষকরা।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা আব্দুস সবুর মিয়া বলেন, চলতি বছরের ১-২৬ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ মিলিমিটার। বৃষ্টি শুরু হয়েছে, এর পরিমাণ আরো বাড়বে এবং নিম্নাঞ্চল গুলো প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি কম হওয়ায় কৃষকরা সেচ দিয়ে আমন চারা রোপণ করছে। এ কারণে কৃষকদের অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩ শতাংশ জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। সম্পূরক সেচ দিয়ে বাকি জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি কৃষকরা এখন বলান চারা রোপন করছে। যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে একারণে আশা করা হচ্ছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ৮০ শতায়শ জমি রোপন করা সম্ভব হবে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/জুলাই/২৭/২২