।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনের শিকার হয়ে ফাতেমা বেগম (১৯) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত শাশুড়ি শাহিদা বেগমকে আটক করলেও ঘাতক স্বামী শামীম মিয়া পলাতক রয়েছেন। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে দলদলিয়া ইউনিয়নের কানিপাড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের পুত্র শামীম মিয়ার (২৫) সাথে প্রতিবেশি সিদ্দিক আলীর কন্যা ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়। ফাতেমা চার মাসের গর্ভবতি বলে জানা গেছে। শুক্রবার দুপুরে (১৫ জুলাই) স্বামী শামীমকে নিয়ে বাবার বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার কথা ফাতেমার। কিন্তু স্বামী ও শাশুড়ি রাজি না হওয়ায় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। পরে ফাতেমাকে স্বামী ও শাশুড়ি মিলে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেধড়ক নির্যাতন করেন। এর একপর্যায়ে গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তিনি। আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে পথিমধ্যে শুক্রবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পিতা সিদ্দিক আলী বলেন, শুক্রবার তারা আমাদের বাড়িতে দাওয়াত খেতে আসার কথা। জামাইয়ের দাবি, দাওয়াত খেতে আসলে যৌতুকের টাকা নিয়ে বাড়িতে ফিরবে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে যায়। ইতোমধ্যে এক লাখ দিয়েছি। আবারো এক লাখ চাচ্ছে। আমি গরীব মানুষ এত টাকা পাই কোথায়। তারা যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই নির্যাতন করে আসছিল। অবশেষে আমার মেয়েটাকে মেরেই ফেলল। আমি এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠুু বিচার চাই।
এ বিষয়ে দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী সরকার বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মেয়েটার বাবার বাড়িতে দাওয়াত খাওয়াকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। পরে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যায়। সামান্য বিষয় নিয়ে এমন নির্মম নির্যাতন খুবই অমানবিক।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, এ ঘটনায় নিহত গৃহবধুর মা নিলুফা বেগম বাদি হয়ে যৌতুকের দাবিতে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন। লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের স্বামী শামীমকে গ্রেপ্তারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/জুলাই/১৬/২২