।। নিউজ ডেস্ক ।।
সীমাহীন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, পেশি শক্তির দাপট, ভিজিএফ ও ভিজিডির মালামাল আত্মসাৎসহ বিস্তর অভিযোগ এনে নাগেশ্বরী উপজেলার ৯নং ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন সদস্য রেজুলেশন করে চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। এ ঘটনায় গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
ইউনিয়নের সদস্যরা (মেম্বার) অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধে এবং হতদরিদ্র মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানান, ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান। এ নিয়ে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ মাছুম উপজেলা পষিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানকে নিয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সরেজমিন ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ গেলে চেয়ারম্যান আগামী ১৮জুলাই পর্যন্ত সময় চেয়ে আবেদন করেন। অভিযোগকারীরা উপস্থিত থাকলেও চেয়ারম্যানের আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্তের তারিখ পুননির্ধারণ করে ১৯ জুলাই করা হয়েছে। এর বাইরে তদন্তের অন্যান্য কাজ চলমান আছে।
ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আনিছুর রহমান জানান, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯,৩৪ এর ৪ (ঘ) ধারার আলোকে ১১জন ইউপি সদস্য কর্তৃক উল্লিখিত আইনের ৩৯ ধারা অনুযায়ী অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। একই সঙ্গে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফিকে অপসারণের দাবী জানিয়ে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। অভিযোগে স্বাক্ষরকারী অন্যান্য ইউপি সদস্যরা হলেন-আব্দুল বাতেন (১নং ওয়ার্ড), শ্রী গয়ানাথ রায় (২নং ওয়ার্ড), আবুল হোসেন ব্যাপরী (৩নং ওয়ার্ড), আবুল ফারুক মিঠু (৪নং ওয়ার্ড), ফেরদৌস আলী (৬নং ওয়ার্ড), সাইফুর রহমান (৭নং ওয়ার্ড), আমিনুল ইসলাম (৮নং ওয়ার্ড), শফিকুল ইসলাম (৯নং ওয়ার্ড), ফাতেমা বেগম (সংরক্ষিত মহিলা সদস্য-১, ২ ও ৩ ওয়ার্ড ) এবং নওরোজ জাহান (সংরক্ষিত মহিলা সদস্য-৪, ৫ ও ৬ ওয়ার্ড )।
তারা দু’দফা বৈঠক করেন ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে। চেয়ারম্যান শফিউল আলমের বিরুদ্ধে ৯টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনয়ন করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগ হলো- ঈদের সময় তালিকাভুক্ত দু’সহস্রাধিক দু:স্থ মানুষকে ভিজিএফের চাল না দিয়ে আত্মসাৎ। মোসলেমা গত ৫ মাস থেকে ভিজিডির (ভিজিএফ কার্ড নং ১৯২) চাল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চেয়ারম্যান শফিউল আলমের ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে। সরকারি গেজেট উপেক্ষা করে ইউনিয়ন পরিষদের নাম পরিবর্তন করে ৯নং আলোকিত ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ হিসাবে ঘোষণা এবং প্রচার প্রচারণা করা। সরকারি গেজেটে প্রকৃত নাম ৯নং ভিতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ। সরকারি বিধিবিধান না মেনে সুকানদিঘী (নয়ারহাট) নামে নতুন হাট ইজারা প্রদান। অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায় করে কোষাগারে জমা না করে ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়াম্যান শফিউল আলম।
এ বিষয়ে চেয়াম্যান শফিউল আলম শফি তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এসব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। মেম্বারদের অনৈতিক আবদার পূরণ করতে না পারায় আমি পরিস্থিতির শিকার। আমার চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার এখনও ৬মাস হয়নি। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ৬মাস পূর্তির আগে অগ্রহনযোগ্য তাদের এ অনাস্থা প্রস্তাব ।