।। নিউজ ডেস্ক ।।
বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিতীয় দফায় আবারো বন্যা দেখা দিয়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ধরলা ও দুধকুমারের পানি। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়ছে। ফলে নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম সদর ও উলিপুর উপজেলার অন্তত ৬০টি চর ও নদী সংলগ্ন গ্রামের নিম্নঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় অনেকেই উঁচু ভিটা, রাস্তা ও বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
এসব এলাকার পাট, ভুট্রা, বীজতলা ও সবজি ক্ষেত ডুবে গেছে। গ্রামীণ সড়কগুলোর উপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় যাতায়াতের ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। প্রথম দফা বন্যার ধকল কাটতে না কাটতেই আবারো দ্বিতীয় দফায় ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় চরম বিপাকে পড়েছেন মানুষজন। প্রথম দফা বন্যায় অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হলেও দ্বিতীয় দফা বন্যায় পাট ক্ষেতের ক্ষতি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার কৃষকরা।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর সবুজপাড়া এলাকার আবেদ আলী জানান, প্রথম দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ঘর-বাড়ি এখনও মেরামত করতে পারিনি। এরমধ্যেই আবারও ধরলার পানি বাড়তে শুরু করেছে। খুব সমস্যায় আছি।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ারচরের জহুরুল ইসলাম জানান, এই চরের প্রত্যেকটি বাড়িতে ঘরের চাল পর্যন্ত পানি উঠেছিল। সেই পানি নেমে যাওয়ার পর আবারো পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘর-বাড়িতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এমনিতেই প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে নৌকায় বসবাস করেছি। পানি নেমে যাওয়ার চার দিনের মাথায় আবার পানি। এসময় হাতে কাজ নেই। গত বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে। বউ, বাচ্চা নিয়ে খুব আতঙ্কে আছি।
সদরের যাত্রাপুরের চর ভগবতী পুরের নুরবানু জানান, প্রায় ২০ দিন ধরে বন্যার দুর্ভোগে ছিলাম। ঠিকমত রান্না করতে পারিনি। ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্টে ছিলাম। সেই বন্যার পানি নামার পর আবারও বন্যা আসলো। পানি আরো বাড়লে কষ্টের শেষ থাকবে না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধকুমারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘন্টায় উজানে আরো ভারী বৃষ্টি পাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।