।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
বন্যা-উপদ্রুত এলাকার নিম্নাঞ্চলসহ বসতবাড়ির অনেক অংশই পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পানীয় জল ও বর্জ্য পদার্থ মিলেমিশে একাকার। এ সময় স্বাস্থ্যসচেতন না হলে দেখা দিতে পারে ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, পেটের পীড়া, ভাইরাল হেপাটাইটিস, চর্মরোগসহ নানা রোগ। এ জন্য নিতে হবে সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ।
বন্যার সময় যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা হয়
১। বন্যার সময় পানিবাহিত রোগগুলো বেশি হয়। কারণ, তখন পানির উৎসগুলো সংক্রমিত হয়। নলকূপ ডুবে যায়। বিশুদ্ধ পানির অভাব, দূষিত পানির কারণে এ রকম হয়। আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস হয় সবচেয়ে বেশি। তাই এই রোগগুলো থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
২। কিছু মশাবাহিত রোগ হয়, যেমন—ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু। আটকে থাকা পানিতে এই রোগের জীবাণুগুলো সহজেই বংশবিস্তার করতে পারে।
৩। ফাঙ্গাসজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়, বিশেষ করে বন্যা-পরবর্তী সময়টাতে। এ সময় নানা রকম চর্মরোগ, চোখের অসুখ হয়। স্ক্যাবিস, আঙুলের মাঝখানে ঘা, টিনিয়া ইনফেকশন এ সময়ে খুব বেশি দেখা যায়।
৪। কৃমির প্রকোপ বাড়ে এ সময়ে।
৫। আবহাওয়া ও তাপমাত্রার তারতম্যজনিত কারণে নানা রকম ভাইরাসজনিত অসুখ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, সাইনোসাইটিস ইত্যাদি দেখা দেয়।
করণীয়
১। বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করাই হলো প্রথম ও প্রধান কর্তব্য।
২। পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। খোলা পানি পান করবেন না।
৩। প্রয়োজনে হ্যালোজেন ট্যাবলেট দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করে নিতে হবে। প্রচলিত ফিল্টার দিয়ে পানির জীবাণুমুক্তকরণ সম্ভব হয় না।
৪। বাড়িতে সব সময় শুকনো খাবার মজুদ রাখার চেষ্টা করুন। খাবার স্যালাইনও যেন পর্যাপ্ত থাকে।
৫। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। খাবার খাওয়ার আগে ও পায়খানা করার পর হাত ধুতে সাবান ব্যবহার করবেন।
৬। সব সময় হাত-পা পরিষ্কার রাখবেন। বন্যার পানিতে বেশিক্ষণ পা ডোবালে ফাঙ্গাস আক্রমণ করতে পারে। তাই বারবার কুসুমগরম পানি দিয়ে হাত-পা ধুয়ে শুকনা কাপড় দিয়ে হাত-পা শুকিয়ে নিতে হবে।
৭। কৃমিনাশক ওষুধ খেতে হবে।
৮। জ্বর, জন্ডিস, পেটের অসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
কী প্রস্তুতি নেবেন?
বন্যার সময় শুকনা খাবার, চিড়া, মুড়ি, খই, বিস্কুট, দেশলাই, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওরস্যালাইনের প্যাকেট, মশার কয়েল প্রভৃতি সংরক্ষণ করুন এবং দলিল, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পলিথিনে মুড়িয়ে রাখুন। গর্ভবতী, শিশু ও বৃদ্ধদের উঁচু স্থানে রাখার ব্যবস্থা করুন। ঘুমানোর সময় শিশুকে খাটের এক কোনায় না রেখে খাটের মাঝখানে ঘুম পাড়ান। নলকূপের মুখ পলিথিন দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিন। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নলকূপের পরিষ্কার পানি না আসা পর্যন্ত পানি চেপে ফেলে দিন।