।। নিউজ ডেস্ক ।।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রৌমারী উপজেলার ৪ ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। অন্যদিকে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও এখনও বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্ত ঘেঁষা রৌমারী উপজেলার জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার রৌমারী, শৌলমারী, দাঁতভাঙ্গা ও যাদুর চর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
পানি বৃদ্ধির ফলে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষজন। নৌকা করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাদাম, পাট ও সবজিসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে এখানকার কৃষকরা।
রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের কৃষক আবুল হোসেন জানান, হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জমির বাদাম ও সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা খুব ক্ষতির মুখে পড়েছি।
রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্ল্যাহ উপজেলার ৩৫ গ্রামের ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া উপজেলার ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় সাময়িকভাবে সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, রৌমারী উপজেলার ২১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল জানান, বৃষ্টির সাথে নেমে আসা উজানের পানিতে রৌমারী উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তবে কী পরিমাণ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে তা নিরুপণে কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি পানি বন্দি মানুষদের সহায়তার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২০৬ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে ও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের ঢলে ও বৃষ্টিতে রৌমারী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম পানি ঢুকে পড়লেও আপাতত বড় ধরনের কোন বন্যার সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী ২০ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।