।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
হতাশা, স্ট্রেস ও উদ্বেগ এগুলো যে শুধু বড়দের বেলায় ঘটে, সেটি কিন্তু ভুল ধারণা। বরং শিশুদের মাঝেও দেখা দিতে পারে এ রকম ভয়ঙ্কর বিষয়গুলো। পরিবারের কারও কাছ থেকে আলাদা হওয়া, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকা, পড়াশোনার চাপ, নতুন কিছু করার চেষ্টা বা চেষ্টা করে সফল না হওয়ার মতো কারণে শিশুরা স্ট্রেস ফিল করতে পারে। বাচ্চাদের মধ্যে স্ট্রেস এবং উদ্বেগ বেড়ে গেলে তা তাদের আচরণে ও স্বাস্থ্যে অত্যন্ত ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোটবেলা থেকে শিশু যদি মানসিক চাপের মধ্যে থাকে, তাহলে তা তার ব্যবহারে বড় প্রভাব ফেলবে। অনেক সময় উদ্বেগ ও মানসিক চাপের কারণে সে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে । বড়রা মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে যে রকম ব্যবহার করেন, শিশুরা কিন্তু তা করে না। তবে তাদের আচরণেই আপনাকে বুঝতে হবে যে তারা মানসিক চাপের মধ্যে আছে কি না। শিশুদের মধ্যে মানসিক চাপ থাকলে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়।
মানসিক চাপের লক্ষণসমূহঃ-
দুঃস্বপ্ন দেখা : শিশু কোনও উদ্বেগ ও আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটালে ঘুমের মধ্যে নিয়মিতভাবে দুঃস্বপ্ন দেখে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছোটরা ঘুমের মধ্যে আতঙ্কে কেঁপে কেঁপে ওঠে। এমনটা প্রায়শ হলে বোঝার চেষ্টা করুন, তার মনের মধ্যে জমে থাকা ভয়টা ঠিক কোথায়।
বিছানা ভিজিয়ে ফেলা : মানসিক চাপে থাকা শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। সব সময়ে তাদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক কাজ করে। এই কারণে অনেক শিশুই বিছানা ভিজিয়ে ফেলে। এমনটা হলে রাগারাগি করবেন না। এর কারণ কী, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন।
খাওয়াদাওয়ায় অনীহা : শিশুরা যদি মানসিক অশান্তিতে ভোগে, তা হলে তার ছাপ পড়বে তাদের খাওয়াদাওয়ার উপরেও। এক্ষেত্রে দেখা যাবে সে কম খাচ্ছে, না হলে খুব বেশি খাচ্ছে। দুটোই কিন্তু ভাল লক্ষণ নয়। এমন হলে তার সঙ্গে কথা বলে গল্পের ছলে সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করুন।
আক্রমণাত্মক আচরণ : মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে আমরা অনেক সময় অল্পতেই রেগে যাই। শিশুর ক্ষেত্রেও এটা ঘটতে পারে। কোনও পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে। হঠাৎ হঠাৎ করেই শিশু অকারণেই চিত্কার করে, কারও সঙ্গে কথা বলতে না চায় কিংবা কথায় কথায় অন্যের উপর হাত তোলে তাহলে তা উদ্বেগের বিষয়। এই লক্ষণগুলি কখনই অবহেলা করবেন না। প্রয়োজনে কোনও মনোরোগ বিশেষজ্ঞর সাহায্য নিন।
মনোসংযোগের অভাব : সন্তান যদি হঠাৎ করে খুব অমনোযোগী হয়ে উঠে, স্কুলের কাজ সময় মতো শেষ করতে না পারে বা খেলাধুলাতেও মনোযোগী না হয় তাহলে বুঝতে হবে আরও ভাল করার চাপে সে মনোসংযোগ হারিয়ে ফেলছে। শিশুর সঙ্গে কথা বলে তার মনের উদ্বেগ দূর করুন।
শিশুর ওপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া : বাচ্চার ওপর কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হলে অথবা বাচ্চারা যা বোঝাতে চায় তা যদি না বুঝতে পারা যায় এবং সেটি বোঝার জন্য যদি তাদের যথেষ্ট সময় দেওয়া না হয়, তা হলে এটি তাদের মনে গভীর প্রভাব ফেল। ফলে বাচ্চারা নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এমন হলে তারা একসময় বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনের থেকেও নিজেকে আলাদা করে রাখে। এ ধরনের কোনো লক্ষণ বুঝতে পারলে অবশ্যই বাচ্চার সঙ্গে সে বিষয়ে খোলামেলা কথা বলতে হবে। এতে বাচ্চার মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বেড়ে উঠতে কার্যকরী হবে।