।। নিউজ ডেস্ক ।।
রৌমারীতে মা-সন্তানকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় শনিবার (২১ মে) মধ্যরাতে নিহত হাফসা আক্তার হারেনার বাবা হারুনুর রশীদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে রোববার (২২ মে) সকালে নিহত হাফসা আক্তার হারেনা ও তার ছেলে হাবিবের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোন্তাছের বিল্ল্যাহ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রৌমারী থানার এসআই লিটন মিয়া এবং মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নতুনবন্দর হাজিপাড়া গ্রামে বাবা হারুনুর রশীদের বাড়িতে অবস্থানরত হাফসা আক্তার হারেনা তার প্রতিবন্ধী শিশুপুত্র হাবিবের চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার (১৯ মে) বিকেলে একই গ্রামের অধিবাসী বিয়ের সময়কার উকিল বাপ জাকির হোসেন জফিয়ালের বাড়িতে যায়। এরপর শুক্রবার (২০ মে) সকালে তার সাথে শিশুপুত্রসহ হারেনা কুড়িগ্রাম জেলা সদরে আসেন।
এ অবস্থায় দুপুর আড়াইটার দিকে হারেনার ভাই হাসিনুর রহমান মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে হারেনা জানান, তারা কুড়িগ্রাম থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। এরপর তারা আর মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। তাদের হদিসও পাওয়া যায়নি।
এর পরদিন শনিবার (২১ মে) ভোরে একটি ধান ক্ষেত থেকে শিশু হাবিবের গলা কাটা লাশ পাওয়া যায়। এর পাশে গলাকাটা অবস্থায় মা হাফসা আক্তার হারেনা গোঙরাচ্ছিল। তখন হাফসা আক্তার হারেনা জীবিত ছিল। এ অবস্থায় প্রথমে তাকে রৌমারী উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রেফার্ড করা হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে হারেনার মৃত্যু ঘটে।
এদিকে হারেনার উকিল বাবা জাকির হোসেন জফিয়ালের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এখন পর্যন্ত রহস্যাবৃত রয়ে গেছে।
মৃত হারেনার ভাই হাসিনুর আরও জানান, দেড় বছর আগে তার বোন হাফসার সঙ্গে একই উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়াকান্দা গ্রামের মৃত বাহাদুরের ছেলে সাহেব আলীর বিয়ে হয়। তাদের ৫ মাস বয়সী একটি প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান রয়েছে।
এ অবস্থায় ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন পর স্বামী সাহেব আলী তার স্ত্রী হারেনা ও ছেলে হাবিবকে নতুনবন্দর হাজিপাড়া গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে রেখে দিনমজুরের কাজ করার জন্য টাঙ্গাইল চলে গিয়েছিলেন।
এ প্রসঙ্গে রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোন্তাছের বিল্ল্যাহ জানান, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহত হাফসা আক্তার হারেনার বাবার দায়ের করা এজাহার মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি নিহত মা ও সন্তানের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রোববার সকালে জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পূর্বাপর অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে হত্যার মোটিভ এবং কে বা কারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের সনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।