।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় সড়ক দখল করে চলছে ভুট্টা, বোরো ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজ। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও পথচারীরা। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা, রাজারহাট, উলিপুর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, রৌমারী উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বোরো ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজ চলছে পুরোদমে। এই চিত্র সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে গ্রামীণ সড়কগুলোতে। তবে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে রৌমারী উপজেলায়। কাটা-মাড়াইয়ের জন্য এলাকাবাসীদের রাস্তা দখলের প্রতিযোগিতা যেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা-ঘোগাদহ সড়ক, রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট-আনন্দবাজার সড়ক, উলিপুর উপজেলার উলিপুর-নাজিমখান সড়ক, নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী সড়ক, ফুলবাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ী-বড়বাড়ীহাট সড়ক ও রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা শালুর মোড় হতে উপজেলা শহর রৌমারী পর্যন্ত পাকা সড়কসহ জেলার সবক’টি উপজেলার গ্রামীণ সড়ক জুড়ে ধান-ভুট্টাসহ খড় শুকাতে দেখা গেছে।
কোনো কোনো পাকা সড়কের বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে ধান। সড়ক হয়ে উঠেছে ধান মাড়াইয়ের উঠোন। কৃষকরা পাশেই শ্যালোচালিত ইঞ্জিন দিয়ে মাড়াই করছেন এসব ধান। মাড়াই শেষে অনেকে ধান বাড়ি নিয়ে গেলেও খড় সড়কের ওপরই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছেন শুকানোর কাজে। এ ছাড়া কেউ কেউ আবার ভুট্টাও শুকাচ্ছেন সড়কে। অনেকে শুকানোর পর সড়কের পাশেই খড় স্তুপ করে রেখেছেন। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়েই চলছে ট্রাক, অটোরিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, ট্রাক্টরসহ অন্যান্য যানবাহন।
অটোরিকশা চালকরা আক্কাছ বলেন, সড়ক জুড়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছেন কৃষকরা। সড়কের ওপর ধান মাড়াইয়ের কাজ করায় তাঁরা যাত্রী নিয়ে গাড়ি চালাতে নানা সমস্যায় পড়ছেন। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়েই চলেছে। সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গার সুরুজ মিয়া বলেন, এ মৌসুমে খড় বিছানো সড়কে গাড়ি চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কয়েক দিন আগে মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কে বিছানো খড়ে পিছলে পড়ে আহত হন কয়েক জন চালক।
রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা এলাকার পথচারী রমিজ উদ্দিন বলেন, ধান মাড়াই শেষে কৃষকেরা ধানের অবশিষ্টাংশ ও খড় সড়কে ফেলে রাখেন শুকানোর জন্য। বৃষ্টি হলে ওই খড় সড়কে কর্দমাক্ত হওয়ার পরে সেগুলো সরানো হয় না। পরে পচে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে প্রায়ই দেখা যায়। পথচারীদের অভিযোগ থাকলেও বোরো ধান মাড়াইকারীরা বলছেন, তারা অল্প সময়ের জন্য রাস্তায় ধান মাড়াই করছেন। এতে যানবাহনের সাময়িক একটু ক্ষতি হলেও তাদের অন্য কোন উপায় নেই। ট্রাক চালক আব্বাস আলী বলেন, সড়কের দুই পাশে খড়, ধান শুকানো ও মাড়াইয়ের কারণে রাস্তা সরু হয়ে যায়। এতে সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। জ্যামে আটকা পড়লে অনেক সময় ধান অন্য জায়গায় সরিয়ে গাড়ি নিয়ে আসতে হয়।
কুড়িগ্রাম বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, কৃষকরা সড়কে বোরো ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কারণেই বর্তমান সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাড়িছে। কৃষকরা যেন সড়কে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ না করেন এজন্য সকলকে সচেতন হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আরশাফুল আলম রাসেল বলেন, সড়ক দখল করে এ ধরনের কর্মকা- করা বেআইনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত এসব বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হবে।