।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
হাঁটা সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম। ছোট-বড় যে কেউ নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। প্রশ্ন জাগতে পারে ব্যায়ামের জন্য এত কিছু থাকতে হাঁটা কেন গুরুত্বপূর্ণ? হাঁটলে প্রাকৃতিকভাবে পাবেন সুস্থতা ও প্রাণবন্ত অনুভূতি। পেশী, জয়েন্ট এবং হাড়কে শক্তিশালী করে তুলতে হাঁটা বিশেষ অবদান রাখে। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করলে শরীরের বাড়তি মেদ কমে যায় নিশ্চিতভাবে।
নিয়মিত হাঁটলে স্বাস্থ্য উপকারিতা —
➤ মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে: নিষ্ক্রিয় থাকার অর্থ শরীরে পেশীর শক্তি কমে যাওয়া। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা এর ফলে মস্তিষ্কও শুকিয়ে মরে যেতে শুরু করে। আমরা যখন হাঁটি তখন পেশীতে তৈরি হওয়া মলিকিউল বা অণু আমাদের মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সাহায্য করে।
➤ হার্ট ভালো থাকে: হৃৎপিণ্ড ভালো থাকার জন্য হাঁটা খুবই উপকারী। আমাদের পূর্ব-পুরুষরা, যারা শিকার করে জীবন ধারণ করতেন, তারা দিনে ১৫ থেকে ১৭ মাইল হাঁটতেন। দক্ষিণ আমেরিকার জঙ্গলে সিমানে নামের একটি গোত্র আছে যাদের ৮০ বছর বয়সী ব্যক্তির হার্ট ৫০ বছর বয়সী একজন আমেরিকানের হার্টের মতো কাজ করে। এর কারণ হলো তারা সারাদিনই সক্রিয় থাকে।
➤ হজমে সাহায্য করে: হাঁটা মানুষের পরিপাকতন্ত্রের জন্যেও বন্ধুর মতো কাজ করে। “কোষ্ঠকাঠিন্য কাটাতে ওষুধ না খেয়ে আপনি যদি হাঁটতে বের হন, সেটা অনেক ভাল। এর সাহায্যে আপনি খুব সহজেই হজমের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।”
➤ ওজন নিয়ন্ত্রণের অসাধারণ ব্যায়াম: ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন রকম ব্যায়াম করতে দেখা যায়। যদি ওজন কমাতে চান, তবে প্রতিদিন ৬০০ ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে হবে। যেটা একদিনের খাবার থেকে প্রাপ্ত ক্যালরির চেয়ে বেশি। যার ওজন ৬০ কেজি তিনি যদি প্রতিদিন ঘণ্টায় ২ মাইল গতিতে ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করেন, তবে ৭৫ ক্যালরি শক্তি ক্ষয় করতে পারেন। যদি ঘণ্টায় ৩ মাইল গতিতে হাঁটতে অভ্যস্ত হন তবে, ৯৯ ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে পারেন। ঘন্টায় ৪ মাইল গতিতে হাঁটলে আরও বেশি ক্যালরি ক্ষয় করতে পারবেন। এতে ক্যালরি ক্ষয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৫০। হাঁটলে দেহের পেশীগুলো আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
➤ স্মৃতিশক্তি বাড়ে: বয়স বাড়ার সঙ্গে সাধারণত মানুষের স্মৃতিশক্তি কমে যায়। ৬৫ বা এর বেশি বয়সীদের মধ্যে প্রতি ১৪ জনের মধ্যে ১ জনের স্মৃতিভ্রম হয়। আর ৮০ বা এর বেশি বয়সীদের ৬ জনের মধ্যে ১ জনের দেখা দেয় স্মৃতি হারানোর রোগ। নিয়মিত বিভিন্ন ব্যায়াম অনুশীলনে মস্তিষ্কে রক্তচলাচল বাড়ে। এতে স্মৃতিহানি হওয়ার ঝুঁকি ৪০ ভাগ পর্যন্ত কমে যায়। যুক্তরাজ্যে এক গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্কদের মধ্যে যারা সপ্তাহে অন্তত ৬ মাইল পথ হাঁটেন তাদের স্মৃতিশক্তি অটুট থাকে
➤ রক্তে সুগার কমায়: খাওয়ার পরে কখনই শুয়ে থাকবেন না বরং হাঁটাচলা করুন। কারণ খাওয়ার পরের হাঁটা রক্তে শর্করা হ্রাস করতে এবং হজমে উন্নতি করতে সহায়তা করে। খাবার পরের হাঁটা দুর্দান্ত অনুশীলন হিসাবেও কাজ করে যা আপনাকে ফিট রাখতে সহায়তা করবে।
➤ উদ্বেগ দূর করে: বিভিন্ন গবেষণায় দেখো গেছে যে, উদ্বেগ থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে ১০ মিনিটের হাঁটা ৪৫ মিনিটের ব্যায়ামের মতোই কাজ করে। এছাড়াও প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা আপনার মনকে শান্ত করতে এবং চাপ কমিয়ে উদ্বেগের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে।
➤ মেদ কমায়: নিয়মিত হাঁটলে মেদ কমে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়ে, মন্দ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমে।
➤ ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়: নিয়মিত হাঁটলে ওজন কমে। ফলে স্তন ক্যানসারসহ অন্য অনেক ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
➤ শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায়: হাঁটার ফলে পেশিতে রক্ত সরবরাহ বাড়ে। এতে পেশির শক্তি বাড়ে।