।। জেলা প্রতিনিধি ।।
রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার যাদুরচর, বন্দবেড়, কোদালকাটি, মোহনগঞ্জ ও রাজীবপুর সদর ইউনিয়নে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব ও শিলা বৃষ্টিতে কয়েক শত বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্তসহ আম, কাঁঠালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসময় রৌমারীর শিবেরডাংগি এলাকায় গাছ চাপায় সুফিয়া বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত সুফিয়া উপজেলার শিবেরডাংগি গ্রামের দুলাল মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাত নয়টার দিকে আকাশ হঠাৎ কালো মেঘে ছেয়ে যায় এবং বজ্রপাত শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই ঝড়ো হাওয়াসহ শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। যা ঘন্টাব্যাপী চলমান থাকে। এতে কালবৈশাখী তান্ডব ও শিলাবৃষ্টিতে রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার যাদুরচর, বন্দবেড়, কোদালকাটি ও মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের শত শত বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্তসহ আম, কাঁঠালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এসময় রৌমারীর শিবেরডাংগি এলাকার বাসিন্দা দুলাল মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া নিজ বাড়ীতে গাছ চাপায় গুরুতর আহত হলে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাজীবপুর উপজেলার বাসিন্দা মুরাদুল ইসলাম মুরাাদ জানান, হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে বজ্রপাত শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই ঝড়ো হাওয়া শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড়ের তান্ডবে চরসাজাই উত্তর মন্ডল পাড়া এলাকার দুটি বসতঘর ভেঙে পরে। এসময় ঘরে অবস্থান করা লোকজন আহত হয়। এছাড়াও ঝড়ে একই এলাকার অপর একটি বসত ঘর ভেঙে পরে। এছাড়াও ঝড়ের কবলে পরে স্থানীয় এক নারীর ছাগল মারা গেছে।
রাজীবপুর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার কয়েক শত বসতবাড়িসহ গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তারে গাছ ভেঙে পরায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মেরামতে কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
তিনি আরও জানান, উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। সেখানে ৭০-৮০টি বসত বাড়ি ভেঙে গেছে। উপজেলা জুড়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্যারকে জানানো হয়েছে।
এদিকে রৌমারীর স্থানীয়রা জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে রৌমারীর কয়েক শত বসতবাড়িসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাত থেকে পুরো উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তা মেরামত করার পর বিকেল থেকে স্বাভাবিক রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল ইসলাম রাসেল বলেন, ঝড়ে আনুমানিক দুই শতাধিক বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে ৮টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে তাবু দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহায়তা দেয়া হবে। এছাড়াও ঝড়ে এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে নগদ টাকাসহ ৫০ কেজি চাউল দেয়া হয়েছে।##
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//সুভাষ/এপ্রিল/২৭/২২