।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে তবকপুর ইউনিয়নের ডম্পোর মোড় এলাকায় দহবন্দ বিলে ধার দেনা করে শ্যালো মেশিনে ৫ বিঘা জমিতে বোরোধান বুনেছিলেন হায়দার আলী দম্পতি। আশা করেছিলেন, পরিবারের সদস্য ও গবাদিপশু পালন করে এই ফসল থেকে ভালোভাবে দিন কাটাবে একটি বছর। কিন্তু শনিবার (২৩ এপ্রিল) ইট ভাটার আগুনের তাপে তার আবাদি জমির পুরো বোরোধান পুড়ে গেছে। তীরে এসে তরি ডুবে গেল কৃষক হায়দার আলীর স্বপ্ন।
শুধু হায়দার আলী নয় ওই এলাকার আবু তাহের, নূরুন্নবী মিয়া, মকমল মিয়া, আইয়ুব আলী, মোসলেম উদ্দিন, নাজমুল ইসলামসহ ইট-ভাটার ইটের সাথে পুড়লো শতাধিক কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। দহবন্দ বিলে প্রায় ২’শ একর জমির বোরোধান সম্পূর্ণ পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে এইচ আর ব্রিকস’র ইট পোড়ার আগুনের তাপে। শুধু ধানগাছ নয় এর প্রভাব পড়েছে আম, জাম, কাঁঠাল লিচুসহ সব ধরনের ফলজ ও বনজ গাছের উপর। ঝরে পড়েছে গাছের কচি পাতা। তাদের দাবি দ্রুত পুড়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণসহ পরবর্তীতে যাতে এমনটা না ঘটে তাঁর স্থায়ী সমাধান করা হোক। এছাড়াও দলদলিয়া ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায় গড়ে উঠা ইট-ভাটার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইট-ভাটা থেকে যতদূর চোখ যায় বিলের সব জমির ধান অনেকটাই সাদা ও হলুদ রং ধারন করেছে। ফলে উঠতি ফসলের এমন অবস্থা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ওই ওলাকার কৃষকরা।
ইট-ভাটার আগুনের তাপে কৃষকদের আবাদি বোরধান ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে? দহবন্দ বিলে এইচআর ব্রিকস’র স্বত্বাধিকারী হাফিজুর রহমান তাঁর ইট-ভাটার দ্বারা ক্ষতি হয়েছে স্বীকার করে বলেন, ১৯৯৫ সাল থেকে ইট-ভাটা পরিচালনা করে আসছি কোন বছর এমন হয়নি। এবার শুধু আমার ভাটায় নয় আরও অনেক ভাটায় এমন হয়েছে। কৃষকদের সাথে বসে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা ইউএনও স্যার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে। কৃষকদের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।
এ ব্যাপারে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করমি বলেন, আমাদের মোবাইল কোর্ট চলমান রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার বিপুল কুমার বলেন, এখনও এমন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/এপ্রিল/২৫/২২