।। নিউজ ডেস্ক ।।
দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে প্রায় ১মাস ধরে চলছে বৃষ্টি। ঈদকে ঘিরে রমজানের আগে থেকেই কাপড়, তৈরি পোশাকসহ নানা ব্যবহার্য জিনিসের পশরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু জিনিসপত্রের চড়া দামের কারণে এখনো জমে উঠেনি ঈদের বাজার।
বন্যা আর করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঈদে লাভের আশায় বিভিন্ন এনজিও, ব্যাংক ও ব্যক্তি পর্যায়ে চড়া সুদে টাকা লগ্নি করে নতুন কাপড় তুলেছেন। কিন্তু চড়া দামের কারণে বাজারে ক্রেতারা কিনছেন কম। পরিবার নিয়ে কিছু কেনাকাট করে কেউ কেউ হতাশ হয়ে ফিরছেন বাড়িতে। এমন পরিস্থিতিতে বিক্রি কম হওয়ায় ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার সরেজমিনে জেলা শহরের কুড়িগ্রাম সুপার মার্কেট, সাগর সুপার মার্কেট, এ জেড সুপার মার্কেট, নছর উদ্দিন মার্কেটের বিভিন্ন দোকান ও আবরণী, সুলভ বস্ত্রালয়, হাসান ট্রেডিং, বস্ত্রশোভা, আল আমিন বস্ত্রালয়, আফিয়া ,চারুলতা, সেঁজুতি, নিউ আড়ং ফেব্রিক্স, জনতা ক্লথস্টোর, সূর্যমূখী গার্মেন্টস, সততা ক্লথ স্টোরসহ তৈরি পোশাক ও থান কাপড়ের বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায় ক্রেতা উপস্থিতি কম।
ব্যবসায়ীদের দাবি এবার নতুন কাপড় কিনতে বেশি অর্থ গুণতে হয়েছে তাদের। ফলে দামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাড়তি দাম চাওয়ায় ক্রেতারাও পিছিয়ে যাচ্ছে। তাদের আশা এই অবস্থা কেটে যাবে, জমে উঠবে ঈদের কেনাবেচা।
পরিবার নিয়ে পোশাক কিনতে এসেছেন রাজারহাটের ছিনাইয়ের মিজানুর রহমান। দোকান ঘুরে কাঙ্খিত পোশাক পেলেও দাম পেলেন তার নাাগালের বাইরে। তিনি বলেন, রোজা নিয়ে মার্কেট ঘুরতে ঘুরতে মেয়ের পোশাক কিনেছি অনেক দাম দিয়ে। নিরুপায় হয়ে বাজেটের সিংহভাগই ব্যায় করতে হচ্ছে কাপড় চোপর কিনতে। বেশি দামের কারণে পরিবারের অন্যাদের জন্য কেনাকাটার সাহস পাচ্ছিনা।
আদরি বেগম এসেছেন মোগলবাসার ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড় থেকে। সাথে থাকা দুই শিশুকে দেখিয়ে বলেন তার সন্তানদের মুখে ঈদের খুশি দেখতে পোশাক কিনতে এসেছেন। কিন্তু দাম এত চড়া যে কোন কিছু না কিনেই ফিরে যেতে হচ্ছে তাকে।
কাপড় ব্যবসায়ী সুলভ বস্ত্রালয়ের গিয়াস খান ও আবরনী ফ্যাশন সুমন জানান, এ বছর পোষাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে দাম বেশী নেয়ায় পোশাকের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি। পরিবহণ খরচও বেড়েছে। এ কারনে ক্রেতারা মাকের্টে এসে পোশাক দেখলেও সহজে কিনছেন না। তুলনামুলক এখন বাজার জমে ওঠেনি। তবে শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে কিছুটা। আমরা আশা করছি দুই-তিন দিনের মধ্যে বিক্রি বেড়ে যাবে। ঈদের পোশাক বিক্রি না হলে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মধ্যে পড়বে ।
কুড়িগ্রাম বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রওশন আমিন রিন্টু বলেন, কুড়িগ্রামে প্রায় আড়াই শতাধিক কাপড় ব্যবসায়ী বিভিন্ন এনজিও, ব্যাংক ও ব্যক্তি পর্যায়ে চড়া সুদে লাাখ লাখ টাকা ঋণ করে দোকানে নতুন কাপড় তুলেছেন। কিন্তুু এখন পর্যন্ত ব্যবসা জমে না ওঠায় ঋণ কিভাবে শোধ করবেন এই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। তবে সামনের দিনগুলোতে ব্যবসা জমে ওঠার আশা করছেন তিনি ।