।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার ফলন বেশি হওয়াতে কৃষকরা ধান গমের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে বেশি ঝুঁকে পড়েছেন। এখন ভুট্টার মোচায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৫৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলে অর্জিত হয়েছে ৫৬৫ হেক্টর। গত মৌসুমে লক্ষমাত্রা ছিল ৪৮৫ হেক্টর এবার ভুট্টা চাষে এলাকার কৃষকেরা বেশি ঝুঁকে পড়েছেন।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ১৩টি ও একটি পৌরসভার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলেও ভুট্টার চাষ করা হয়েছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদী বেষ্টিত ৮টি ইউনয়নের চর গুলোতে ভুট্টার আবাদ চোখে পড়ার মতো। ধানের চেয়ে কম খরচে ভুট্টার চাষ করা হয়। একদিকে খরচ কম অন্যদিকে উৎপাদনে ধানের চেয়ে ভুট্টার ফলন প্রায় দ্বিগুণ। প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে কৃষকের খরচ ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে ৩৫ থেকে ৩৮ মণ ভুট্টা ঘরে তোলে কৃষকরা। ভালো ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
হাতিয়া ইউনিয়নের রামখানা চরের ভুট্টাচাষি আজিজুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমি ১২ একর জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছি। ইতিমধ্যে ভুট্টার মোচা এসেছে। ধানের চেয়ে কম খরচে দ্বিগুণ ভুট্টা উৎপাদন করা যায়। অনেক আশা করে ভুটা রোপণ করেছি, বাম্পার ফলন ফলন হবে। তবে ন্যায্য দাম পেলে কষ্ট সার্থক হবে এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে থাকতে পারবো।
সাহেবের আলগা ইউনিয়নের হকের চরের ভুট্টা চাষী ছবুর আলী বলেন, এলাকার যেসব জমিতে পূর্বে বোরো ধান সহ অন্যান্য আবাদ করা হত সেসব জমির অনেক গুলোতেই আমারা এবার ভুট্টা করছি। বোরো চাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি অথচ যখন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয় তখন ধানের বাজারে ধস নামে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচই উঠে না। কিন্তু ভুট্টার উৎপাদন খরচ যেমন কম দামও তেমন বেশি থাকে। এ জন্য আমরা ভুট্টা চাষে এবার ঝুঁকে পড়েছি।
বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের জলঙ্গার কুটি গ্রামের ভুট্টা চাষী আমিনুল ইসলাম,মুকুল মিয়া,আশরাফুল আলম, আব্দুল হক সহ অনেকেই জানালেন একই কথা।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিশ্বনাথ মজুমদার বলেন, এলাকার কৃষকরা যাতে ভুট্টা যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল ভুট্টা উৎপাদন করতে পারে এ জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের নিকট গিয়ে পরামর্শ প্রদান করছি। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে ভুট্টাকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমান ঔষধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে থাকি।
উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, উচ্চ মূল্য ও পানি সাশ্রয়ী ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষে ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে। বর্তমানে অনুকুল আবহাওয়া ও রোগবালাই কম হওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/এপ্রিল/১১/২২