।। নিউজ ডেস্ক ।।
চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে শনিবার (০৯ এপ্রিল) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীর স্নান সম্পন্ন হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র স্নান উপলক্ষে গত তিনদিন পূর্ব থেকেই চিলমারীতে শুরু হয় আয়োজন।
হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য, তুমি আমার পাপ হরণ করো। মন্ত্র উচ্চারণ করে পূণ্যার্থীরা কৃপা চান ব্রহ্মার। স্নান উৎসবে মেতে উঠেন পূণ্যার্থীরা। গত কয়েকদিন থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পূণ্যার্থীরা ভিড় জমান উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজারভিটা, পুটিমারী নদীর তীর, চিলমারী বন্দর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। সড়ক পথে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, অটো ও মোটরগাড়ি করে। নদী পথে ট্রলার ও নৌকাযোগে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে পূণ্যার্থীরা সমবেত হন ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। গত দু’বছরে করোনার কারনে উৎসব না হওয়ায় এবারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুলসংখ্যক পূণ্যার্থী যোগ দিয়েছেন স্নান উৎসবে, বলেন উৎসব কমিটির নেতারা।
প্রায় ৪শত বছর ধরে প্রতিবছর চৈত্রী মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এই ঐতিহ্যবাহী স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। হিন্দু ধর্ম মতে এটি একটি পূন্য কর্ম এবং স্নানের স্থানটি তীর্থ স্থান।
চিলমারী ফকিরের হাট ঘাট থেকে রাজার ভিটা পর্যন্ত শুরু হয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার ব্যাপী ব্রহ্মপুত্র নদে এই স্নানের আয়োজন করে চিলমারী উপজেলা প্রশাসন ও পূঁজা উদযাপন কমিটি। শুক্রবার রাত ৯.১১ টা থেকে শনিবার রাত ১১টা ৮ মিনিট অষ্টমী প্রহর থাকলেও স্নান করার উত্তম সময় ধরা হয়েছে শনিবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিট ৩ সেকেন্ড থেকে ১০টা ৩ মিনিট ৫১ সেকেন্ড পর্যন্ত। ৫ লক্ষাধিক হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ সকল ধর্মের অনুসারীদের পদচারনায় প্রমাণ করলো রাম-রহিমের সত্যিকারের চারণ ভূমি চিলমারী বন্দর।
সরেজমিনে, স্নান করতে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রী গদা চন্দ্র, শ্রী ডালু চন্দ্র, পলাশ কুমার সহ অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানান করোনার কারনে গত বছর অষ্টমির স্নান করতে পারিনি কিন্ত এবার শান্তি পূর্ণ ভাবে স্নান করলাম।
স্নান উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। দুর-দুরান্ত থেকে আসা পূন্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশী পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ শামসুজ্জোহা অষ্টমী স্নান মেলা পরিদর্শণ করেন।