।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
আমাদের রক্তে শর্করার (ব্লাড সুগার) পরিমাণ সারাদিন ধরে অল্প মাত্রায় বাড়ে ও কমে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই পার্থক্যটা অনেক বেশি হতে পারে। শর্করা বেড়ে গেলে যেমন সমস্যা হয় তেমনি কমে গেলেও ঘটতে পারে বিপদ। রক্তে শর্করার সঙ্গে সম্পর্কিত জটিলতা থেকে রক্ষা পেতে এর ভারসাম্যের বিষয়টি বোঝা জরুরি।
স্বাভাবিকের চেয়ে কম ও দেরিতে খাবার খাওয়া, শারীরিক কাজে পরিবর্তন ও অনুপযুক্ত ডায়াবেটিসের ওষুধ রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার প্রধান কারণ। এমনকি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি মাত্রায় ডায়াবেটিসের ওষুধ নিয়ে ফেললেও হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি যদি ভুল করে অন্য কোন ইনসুলিন নেন বা একবার ডায়াবেটিসের ওষুধ খাওয়ার পর আবার ভুল করে ওষুধ খান তাহলেও এটা হতে পারে।
রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার কারণ কী?
⇨ অত্যধিক ইনসুলিন গ্রহণ
⇨ শারীরিক কার্যকলাপের পরিমাণ ও সময়
⇨ খাবারে কতটা ফ্যাট, প্রোটিন ও ফাইবার আছে
⇨ গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া
⇨ খাওয়া, ঘুমি ইত্যাদির সময়সূচী পরিবর্তন
⇨ ঋতুস্রাব ইত্যাদি
রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ কী কী?
⇨ অস্থিরতা
⇨ মাথা ঘোরা
⇨ ঘাম
⇨ ক্ষুধা
⇨ দ্রুত হার্টবিট
⇨ মনোনিবেশ করতে অক্ষমতা
⇨ বিভ্রান্তি
⇨ বিরক্তি
⇨ উদ্বেগ বা নার্ভাসনেস
⇨ মাথাব্যথা
রক্তে শর্করার মাত্রা (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) ৭০ মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার (এমজি/ডিএল) বা ৩.৯ মিলিমোলস প্রতি লিটার (এমএমওএল/এল) এর নিচে হলেই বুঝতে হবে তা কমতে শুরু করেছে। এ সময় সতর্ক থাকা জরুরি। দ্রুত রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে তখন গ্লুকোজ বা ফলের রস পান করতে হবে।
রোজা শুরুর অন্তত প্রথম তিনদিন পাঁচ বেলা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়মিতভাবে মাপতে হবে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর, আবার সকাল ১১টায়, বিকাল ৪টায়, ইফতারের ঠিক আগে ও ইফতারের দুই ঘণ্টা পরে। এসব পরীক্ষার ফলাফল দেখে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ও খাদ্যের সমন্বয় করতে হবে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার যত বিপদ
শরীরে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ খুব পরিষ্কার ভাবে বোঝা যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার পরও দীর্ঘ সময় এর লক্ষণগুলো থাকতে পারে। শর্করার মাত্রা ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার পরও চিকিৎসা না করলে কোমা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণে হৃদপিণ্ডের ছন্দপতন ও বৈদ্যুতিক সংকেতে পরিবর্তন ঘটতে পারে। ডায়াবেটিস সংক্রান্ত স্নায়বিক সমস্যায় ভোগা লোকজনের পরবর্তীতে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। ফলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে রক্তে শর্করার নিরাপদ মাত্রা জেনে তা বজায় রাখার চেষ্টা করা উচিত।