।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই অনেকে হাতে তুলে নেন ধোঁয়া ওঠা গরম বেড টি। আবার অনেকেই অফিসে কাজের ফাঁকে কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা সবখানে চা-কফি না থাকলে যেন চলেই না! কিন্তু যারা ধূমপানে অভ্যাস্ত তাদের বেশিরভাগেরই অভ্যাস থাকে ধোঁয়াওঠা এককাপ চায়ের সঙ্গে ধূমপান করার। ব্যস্ত সময় বাঁচাতে কিংবা শুধু অভ্যাসের বশে এমনটা করে থাকেন তারা। বেশিরভাগ চায়ের দোকানেও আপনি একই চিত্র দেখতে পাবেন। ধূমপান তো এমনিতেই ক্ষতিকর অভ্যাস, তার সঙ্গে যদি যোগ করেন গরম চা, তখন সেটি আরও বেশি বিপদের কারণ হয়ে ওঠে।
যদিও প্রাকৃতিক বিভিন্ন ধরনের চায়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। তবে অনেকেই গরম চা পান করার সঙ্গে সঙ্গে ধূমপান করেন, যা হতে পারে কঠিন রোগের কারণ।
গবেষণায় দেখা গেছে যে ধূমপায়ীরা গরম চা খেলে, খাদ্যনালীর ক্যা্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। যাদের ধূমপান বা মদ্যপানের অভ্যাস থাকে তাদের এমনিতেই খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার এর সঙ্গে গরম চা পান করতে থাকলে সেই ঝুঁকি আরও অনেকটা বেশি বেড়ে যায়।
চীনের ৩০ বছর থেকে ৭৯ বছরের ৪৫৬,১৫৫ জনের ওপরে এই গবেষণা চালানো হয়েছিল। গবেষকরা জানিয়েছেন, ফুটন্ত গরম চা খাদ্যনালীর কোষের মারাত্মক ক্ষতি করে। সেইসঙ্গে যদি সেই ব্যক্তির ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস থাকে তবে ঝুঁকি বেড়ে যায় আরও।
চীনের ন্যাশনাল ন্যাচারাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের ডা. ক্যানকিং ইউ’র নেতৃত্বের দলটি দেখেছে, উচ্চ-তাপমাত্রার চা পান করার পাশাপাশি অ্যালকোহল সেবন বা ধূমপান করলে খাদ্যনালির ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকি থাকে।
অন্যদিকে ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অ্যান্ড্রু শ্যারকস বলেছেন, ‘আমরা চীনের তুলনায় পশ্চিমে কম তাপমাত্রায় চা পান করি। যা খাদ্যনালির জন্য কম ক্ষতিকর।’
যাদের ওপর গবেষণা চালানো হয়, প্রথম দিকে তাদের কারোই ক্যান্সার ছিল না। তাদের প্রত্যেকের ওপর টানা ৯ বছর নজর রাখা হয়েছিল। দেখা যায়, গবেষণা চলাকালীনই ১৭৩১ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। চীনে যেহেতু চা খাওয়ার প্রবণতা বেশি, তাই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বেশি।
তামাক ও অ্যালকোহল দুটিই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ক্যানসারের মতো মারণ রোগ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাসথেকে দূরে থাকা জরুরি। এই অভ্যাসগুলির সঙ্গে যদি জোট বাঁধে গরম চা তাহলে সমস্যা আরও বৃদ্ধি পায়।