।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
গরমের দিনে অধিকাংশ মানুষ ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করে থাকেন। অনেকে তো বাইরে থেকে বাড়িতে ঢুকেই ঢকঢক করে কয়েক গ্লাস ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করার পরই যেন মিলে স্বস্তি। তীব্র গরমে ফ্রিজের ঠান্ডা পানিই যেন একমাত্র শান্তির মহা ঔষধ। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, রোদ থেকে ঘুরে এসে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করার অভ্যাস শরীরে জন্য একেবারেই ভালো নয়। এতে সাময়িক আরাম পাওয়া গেলেও শরীরের ওপর এর বিপরীত প্রভাব পড়ে।
তাহলে চলুন জেনে নিই ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পানের নানা ক্ষতিকর দিকঃ-
হার্ট এর সমস্যাঃ গরম থেকে এসেই ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করলে শরীরের শিরা উপশিরা সঙ্কুচিত হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন করতে হার্টের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। সাথে সাথেই কোনো সমস্যা দেখা না দিলেও, দীর্ঘমেয়াদে জটিল হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।
জ্বর হওয়াঃ শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কিন্তু ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করলে আমাদের রক্ত হঠাৎ করেই শীতল হয়ে যায়। ফলে শরীরে ভেতরের অংশে হঠাৎ করেই অনাহুত অস্বস্তি দেখা দেয়। এধরনের অস্বস্তি জ্বরের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেয়।
শরীরে পর্যাপ্ত পানির চাহিদা পূরণ হয় নাঃ ফ্রিজের ঠান্ডা পানিতে তৃষ্ণা মেটে চট করে, তৃপ্তি চলে আসে তাড়াতাড়ি। ফলে শরীর মনে করে তার আর পানি পানের প্রয়োজন নেই। ফলে শরীরের প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা মেটে না। এ ঘাটতি থেকে পানি শূন্যতা তৈরি হয় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
টনসিলের সমস্যাঃ ফ্রিজের ঠান্ডা পানিতে সহজে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে ফলে টনসিল ফুলে গিয়ে সমস্যা হতে পারে।
হজমের সমস্যাঃ ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করার ফলে পাকস্থলী খাবার হজমের চাইতে
ঠান্ডা পানিকে শরীরের তাপমাত্রায় নিয়ে আসতে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে পাকস্থলীর যে মূল দায়িত্ব সেই খাবার হজমের প্রক্রিয়ায় ছেদ পড়ে, হজমে সমস্যা দেখা দেয়।
ব্যায়ামের পরে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি ক্ষতিকরঃ ওয়ার্কআউটের পর দেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। সে সময় বরফ-ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করলে তা দেহের তাপমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে পারে না। তাতে হজমের গোলমাল হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়ার্কআউটের পর বরং সামান্য গরম পানি পান করুন।
দাঁতের ক্ষতি হয়ঃ গরম থেকে ফ্রিজের ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে আসা মাত্রই দাঁতের বহিরাবরণ সংকুচিত হয়। ফলে এনামেলে ফাটল ধরে। এছাড়া মাড়ি ক্ষয়ের অন্যতম একটি কারণও ফ্রিজের ঠান্ডা পানি।
গর্ভপাতের সম্ভাবনাঃ ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করার ফলে জরায়ুর সঙ্কোচন হয়। গর্ভাবস্থায় এধরনের সঙ্কোচন গর্ভপাতের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
খনিজের অনুপস্থিতিঃ সাধারণ পানি স্বাভাবিক অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদানে পূর্ণ থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। কিন্তু পানি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে এসব খনিজ উপাদানের কার্যকারিতা কমে যায়। তখন শরীরের জন্য এরা আর কোনো কাজ করতে পারে না। ফলে পানি থেকে শরীরের যে খনিজের চাহিদা পূরণ হয় সেটা অপূর্ণই থেকে যায়।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরম থেকে ফিরেই পানি খাওয়ার আগে কিছুক্ষণ বসে বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। শরীরের ঘাম শুকিয়ে এলে তারপর সাধারণ পানীয় খাওয়া যেতে পারে। এমনি পানির পরিবর্তে কেউ চাইলে ডাবের পানিও খেতে পারেন। ডাবের পানি শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে।