।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে যত্ন প্রকল্পের টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে উৎকোচের বিনিময় অন্য উপজেলার সুবিধাভোগিদের মাঝে ভাতার টাকা বিতরণ করার অভিযোগ বঞ্চিতদের। এ ঘটনায় বঞ্চিতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে বিতরণকারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। শনিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার বজরা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বজরা ইউনিয়নে ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্যা পুওরেষ্ট (আইএসপিপি) যত্ন প্রকল্পের টাকা বিতরণ হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী ওই ইউনিয়নের ১ হাজার ১৬০জন সুবিধাভোগির জন্য ১ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭’শ টাকা বরাদ্দ করা হয়। বিতরণের দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাট পোষ্ট অফিসের পরিদর্শক নুরুন্নবী মিয়াসহ প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা শনিবার (১৯ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে ওই ইউপি চত্বরে ভাতার টাকা বিতরণ শুরু করেন। কিন্তু বিতরণের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা অসাদুপায় অবলম্বন করে পাশ্ববর্তি চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট, অষ্টমীর চর ও চিলমারী ইউনিয়নের প্রায় ২ শতাধিক সুবিধাভোগিকে উৎকোচের বিনিময় ভাতার টাকা প্রদান করেন। এ নিয়ে বিতরণকারীদের সাথে ওই ইউনিয়নের ভাতাভোগিদের মাঝে বাকবিতন্ডাও হয়। এক পর্যায়ে বিতরণে টাকা শেষ হলে বাদ পড়েন বজরা ইউনিয়নের প্রায় দেড় শতাধিক সুবিধাভোগি। দিনভর প্রখর রোদে কোলের সন্তান নিয়ে অপেক্ষার পর ভাতার টাকা না পাওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ হন তারা। পরে বিক্ষুব্ধ এসব ভাতাভোগি বিতরণকারীদের ইউপি কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার বিপুল কুমার উপস্থিত হয়ে ভূক্তভোগিদের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পান। দীর্ঘ সময় আলোচনা শেষে রবিবার (২০ মার্চ) বঞ্চিতদের টাকা দেয়ার শর্তে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুন্নবী মিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর মুচলেকা দিয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুক্তি পান।
ভাতাভোগি লাইজু বেগম, শিমু বেগম, মোর্শেদা, রত্না বেগম, ফাতেমা বেগমসহ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা বার বার তাদের কাছে যাই, কিন্ত তারা আমাদের পাত্তা দেয় না। এভাবে দিনভর ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে অপেক্ষা করি। পরে তারা আমাদের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্ত চিলমারীর লোকজনকে টাকা ঠিকই দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মহল্লাদার (চৌকিদার) জানান, তারা ৫০০-১০০০ টাকার বিনিময় চিলমারীর লোকদের টাকা দিয়েছে।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুন্নবী মিয়া বলেন, এ ইউনিয়নে ১১৬০ জন ভাতাভোগি, কিন্ত ১২২০ জনের মাঝে ১ কোটি ৩৫ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এখনও এই ইউনিয়নের প্রায় দেড়শতাধিক মানুষ ভাতা পাননি। তবে অতিরিক্ত লোক কিভাবে টাকা পেল এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
প্রকল্পের এসপিএ(সেফটিনেট প্রোগ্রাম এসি¯ট্যান্ট) ইন্দ্রজিৎ বর্মন বিতরণের অনিয়মের দ্বায় স্বীকার করে বলেন, রবিবার বাকি ভাতাভোগিদের টাকা বিতরণ করা হবে।
বজরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, বিতরণকালে প্রকল্পের লোকজনের অনিয়মের কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরে তারা ইউএনও স্যারের উপস্থিতিতে মুচলেকা দিয়ে যায়।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার বিপুল কুমার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। আমরা তাদের কাছ থেকে ভাতাভোগিদের তালিকা চেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/মার্চ/২০/২২