।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
অনেকেই মনে করেন, চিনি বা গুড় খেলে কৃমি হয় কিন্তু এই ধারণা একদম ভুল। কৃমির সংক্রমণের অন্যতম কারণ হলো অপরিচ্ছন্ন থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা। কৃমি সব বয়সি মানুষেরই হয়ে থাকে। শিশুদের কৃমি হলে তারা তা বুঝে না, প্রকাশও করতে পারে না। শিশুর খাদ্যে অরুচি, পাতলা পায়খানা, বমি বমি ভাব, পায়খানার রাস্তায় চুলকানি হলে বুঝতে হবে তার কৃমি হয়েছে।
কৃমি এক ধরনের পরজীবী। এটি মানবশরীর থেকে পুষ্টি নিয়ে বেঁচে থাকে, বৃদ্ধি পায়, বংশবিস্তার করে। শিশুদের মধ্যে এই পরজীবীর সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৃমির সংক্রমণ বেশি হয়। তবে সতর্ক থাকলে এই পরজীবীর সংক্রমণ মোকাবিলা করা সম্ভব।
বিভিন্ন প্রকার কৃমির মধ্যে গোলকৃমি, ফিতা কৃমি ও গুঁড়া কৃমির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। কখনও কখনও গোলকৃমি শিশুর নাক-মুখ দিয়েও বেরিয়ে আসে।
এটি শিশুর শ্বাসনালিতেও প্রবেশ করতে পারে। এছাড়া এটি শিশুর অন্ত্রে বা পিত্তনালিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। ফিতা কৃমি শিশুর অন্ত্রে লেগে থেকে রক্তপাত ঘটায়। এতে শিশু ধীরে ধীরে রক্তশূন্য হয়ে পড়ে। পায়খানার রাস্তায় চুলকানির জন্য গুঁড়া কৃমি দায়ী।
কৃমির কারণে শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়। কৃমি অন্ত্রে রক্তপাত ঘটিয়ে একদিকে শিশুকে রক্তশূন্য করে আবার অন্ত্রে পুষ্টি উপাদানের পরিপাক ও শোষণে বাধার সৃষ্টি করে ডায়রিয়া ঘটায়।
এভাবে দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ফলে শিশুর খাদ্যে অরুচি হয় এবং সে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবস্থা, অপরিষ্কার ঘরবাড়ি, দূষিত পানির ব্যবহার, টয়লেট শেষে ভালোভাবে হাত না ধোয়া, খাবার তৈরি বা খাওয়ার আগে হাত পরিষ্কার না করা, হাতের নখ বড় রাখা, দাঁত দিয়ে নখ কাটা ইত্যাদির মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায়।
শিশুর কৃমির সংক্রমণজনিত প্রধান লক্ষণগুণো হলো—
পেটব্যথা, পেট ফোলা-ফাঁপা, রক্ত বা রক্তযুক্ত ডায়রিয়া। বমিভাব, বমি, ক্ষুধামান্দ্য, ওজন কমা, জ্বর, ক্লান্তি, হাত-পায়ের ব্যথা এবং মাথাব্যথা।
প্রতিরোধ:
- গৃহস্থালির কাজে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে।
- শিশুদের হাতের নখ বড় রাখা যাবে না এবং দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
- সময়মতো কৃমিনাশক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
- মানুষের অপরিশোধিত মল জমির সার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
- স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
- খাবারের আগে বা টয়লেটের পরে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।