।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে নোটিশ দিয়েও ফেরানো যাচ্ছে না আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। ২২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম রাসেল প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পাওয়া ৭ ব্যক্তিকে নোটিশ প্রদান করেন। বরাদ্দ পাওয়ার পর এ পর্যন্ত ঘরে বসবাস না করার কারণ জানতে এক সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব চাইলেও রবিবার (৬ মার্চ) বিকেল পর্যন্ত কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে উপজেলার ধরণীবাড়ি ইউনিয়নে দুই দফায় ১২১টি প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু ঘর বরাদ্দের শুরুতেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারিসহ কতিপয় অসাদু জনপ্রতিনিধিরা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। প্রকৃত ভূমিহীন ও আশ্রয়হীনদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে স্বচ্ছল ও অন্য জেলার বাসিন্দার মাঝে এসব ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। ফলে ঘর বরাদ্দের বেশ কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও সেই ঘরে আসেননি তারা।
গত ২৭ জানুয়ারি “উলিপুরের আশ্রয়ন প্রকল্প ঘর পেলেন একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি ও স্বচ্ছলরা” শিরোনামে উলিপুর ডট কমসহ কয়েকটি পত্রিকায় এ সক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়। খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
সরেজমিনে ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মুন্সিবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, শিমুল মেহেদী, নুর মোহাম্মদ, শাহিনা বেগম, ছালেমা বেগম, ফজলুল হক, সবুজ মিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়ার পর সেই ঘরে কখনই বসবাস করেননি। এমনকি প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী অন্য বাসিন্দারাও তাদেরকে কখনও দেখেননি। এছাড়াও ৩৬ নং ক্রমিক নম্বরে মাহমুদুল হাসানের পাওয়া ঘরটি ক্লাব ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে জানা গেছে।
এসময় নুর মোহাম্মদ নামের এক সুবিধাভোগির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওই ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামে তার দুই শতক বসতভিটা রয়েছে। তবে সেখানে তিনি থাকেন না । তার এক ছেলে মানসিক রোগি হওয়ায় চিকিৎসার জন্য স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন।
তালিকার ১৯ নম্বরে শিমুল মেহেদীর নাম রয়েছে। সেখানে উল্লেখিত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা, জাতীয় পরিচয় পত্রও এখানকার। তবে ঘরের তালিকা তৈরির সময় চাকুরির সুবাধে ধরণীবাড়িতে কর্মরত ছিলাম। সেসময় তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ফুলুর সাথে সখ্যতা থাকায় একটি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি।
ইউনিয়ন ভূমি সহকারি মাসুদ রানা সরকার তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের সাথে নিজের কোন সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে বলেন, সেসময় একটি চক্র ছিল, তারাই এ কাজটি করিয়েছে। তবে ৩৬ নং ক্রমিকে মাহমুদুল হাসানের নামে ঘরটি বাতিলের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, নোটিশ পাওয়ার পর আমাদের কাছে একজন আসছিলেন। তবে কেন তারা ঘরে থাকেন না, তাদের অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা আছে কিনা এ ব্যাপারে আমরা তদন্ত করতেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ জবাব না দিলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/মার্চ/০৯/২২