।। নিউজ ডেস্ক ।।
মহান একুশের চেতনা ও ভাষা শহিদদের অবদান শিশু-কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কুড়িগ্রামের পাড়া-মহল্লায় শিশু-কিশোররা বাঁশ-কাঠ, কলাগাছ ও রঙিন কাগজ দিয়ে তৈরী করছেন শহিদ মিনার। তাদের এ কাজে উজ্জিবিত করছে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ কুড়িগ্রাম।
৫২’র ভাষা আন্দোলন বাঙালী জাতীয় জীবনের এক চরম অধ্যায়ের দিন। ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা বাঙালী জাতি পেয়েছি মাতৃভাষার অধিকার। এ দিবসটি এখন সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। এক সময় দিবসটি ঘিরে পাড়ায়-মহল্লায় শিশু-কিশোররা বিভিন্ন উপকরন দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে শ্রদ্ধা জানাতো। এর সংখ্যা এখন অনেকাংশে কমে গেছে। একুশের চেতনা শিশু-কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে স্থানীয় সংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ কুড়িগ্রাম জেলা সদরের পাড়া-মহল্লায় ২য় বারের মত শহিদ মিনার নির্মানের প্রতিযোগীতামুলক এ আয়োজন করেছে। এ আয়োজনে সাড়াও পাচ্ছেন তারা।
কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার হরিকেশ সেন পাড়ার শিক্ষার্থী অর্পিতা সরকার জানান, আমরা করোনার কারনে গত বছর থেকে স্কুল বন্ধ থাকায় একুশের প্রভাত ফেরিতে অংশ নিতে পারছিনা। এজন্য আমরা ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে বাড়ির পাশেই অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করেছি।
জানা গেছে, সদরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় শতাধিক অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে। এসব অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরীতে উৎসাহিত করছেন অভিভাবকরাও। কুড়িগ্রাম শহরের হরিকেশ এলাকার সাবেক সরকারি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র সরকার জানান, আমরা ছোটবেলায় বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে একুশের বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতাম। এখন তা তেমন চোখে পড়েনা। গত বছর থেকে সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রচ্ছদ কুড়িগ্রাম শিশু কিশোরদের উৎসাহিত করছে শহীদ মিনার নির্মাণে। এতে আমরা সন্তানদের উৎসাহিত করছি।
জাতীয় রবিন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক সাতকুরি রায় নিলু জানান, করোনা পরিস্থিতিতে এবারও একুশের প্রভাত ফেরির বিধি নিষেধ থাকায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী একুশের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবে না। এ কারনে প্রচ্ছদ কুড়িগ্রামের এ উদ্দ্যোগ শিশুদেরকে একুশের চেতনায় উজ্জিবিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে। সাংস্কৃতিক সংগঠক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক দুলাল বোস জানান, এ আয়োজন নিঃসন্দেহে শিশু কিশোরদের বাঙালী চেতনায় ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত করবে। আয়োজক সংগঠন প্রচ্ছদ, কুড়িগ্রামের সভাপতি জুলকার নাইন স্বপন জানান, প্রতিযোগীতা নয় মুলত শিশু-কিশোরদের একুশের মুল চেতনায় উজ্জিবিত করতে এ আয়োজন।
এ ধরনের উদ্যোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক এমন প্রত্যাশা সাংস্কৃতিক কর্মীসহ সকল স্তরের মানুষের।