।। জেলা প্রতিনিধি ।।
কুড়িগ্রামের ২৭শ কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান ও গ্রামীণ জনপদের সড়ক অবকাঠামো পাল্টে গেছে। দরিদ্র পরিবার গুলোর স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি খানাখন্দ ও ভাঙ্গাচোরা রাস্তাঘাট সংস্কার হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে।
কুড়িগ্রামের গ্রামীণ জনপদের আমজনতা কে পুলকিত করেছে এলজিইডির প্রভাতী প্রকল্প। কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্রদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে স্থানীয় লোকদের সরাসরি সম্পৃক্ততা নিশ্চিতকরণ এবং তাদের মালিকানা বোধ বৃদ্ধি করা, টেকসই জীবিকা নির্বাহ নিশ্চিতকরণ এবং কোভিড ১৯ এর প্রাদুর্ভাবের ফলে দারিদ্র্যের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা থেকে দরিদ্র সম্প্রদায়ের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নীতকরণের লক্ষ্যে কুড়িগ্রামে প্রভাতী প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ( এলজিইডি)। কুড়িগ্রাম এলজিইডির আওতায় “অবকাঠামোগত দক্ষতা উন্নয়ন ও তথ্যের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহনশীলতা বৃদ্ধি (প্রভাতী) ” শীর্ষক প্রকল্পটির মাধ্যমে জেলার ৯টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতে জেলায় ২৭০৯ জন এলসিএস সদস্য পাচ্ছেন টেকসই জীবিকায়ন। পাশাপাশি আয় বর্ধক কার্যক্রমের নিশ্চয়তা।
কুড়িগ্রাম এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচার ডেভলপমেন্ট (ইফাদ) সহায়তাপুষ্ট “প্রভাতী” প্রকল্পটি ১০৫.৪৯ কি.মি. গ্রামীন সড়ক উন্নয়ন, চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দল (এলসিএস) এর মাধ্যমে ১০৫.৪৬ কি.মি গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ, চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দল (এলসিএস) কর্তৃক গ্রামীণ হাট বাজার উন্নয়ন, ৫টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রামীণ হাট বাজারে মহিলাদের জন্য মার্কেট সেকশন নির্মাণসহ সড়ক ও বাজার উন্নয়নে এলসিএস সদস্যদের আয়বর্ধক কার্যক্রম সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের আওতায় ১৩১৮ জন মহিলা ও ১৩৯১ জন পুরুষ এলসিএস সদস্যের সমন্বয়ে জেলার প্রতিটি উপজেলায় মোট ৫৪টি প্যাকেজে ২৯ টি পাকা সড়কের সোল্ডার ও স্লোপ পুনঃনির্মাণ হচ্ছে। যার কার্যকরী দৈর্ঘ্যের পরিমাণ মোট ৬৪.৯০২ কিমি. এবং প্রাক্কলিত ব্যয় সর্বমোট ৩ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। যার মধ্যে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ৪.৩৯৫ কিমি, পাকা সড়কে ৫০জন, চর রাজিবপুরের ৮.৬৮৫ কিমি পাকা সড়কে ১৭৫ জন, রৌমারী উপজেলার ৭.৮৫ কিমি পাকা সড়কে ১৯৭ জন, উলিপুরে ৬.৮৮ কিমি পাকা সড়কে ১২৫ জন, চিলমারীর ৭.৮২৮ কিমি পাকা সড়কে ১৯৯ জন, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৭.৫ কিমি পাকা সড়কে ১৬২ জন, নাগেশ্বরী উপজেলার ৭.৯৫ কিমি পাকা সড়কে ১৭৫ জন, রাজারহাট উপজেলার ৭.৮১৪ কিমি পাকা সড়কে ১৭০ জন এবং ফুলবাড়ি উপজেলার ৬ কি মি পাকা সড়কে ৬৫ জন এলসিএস সদস্য প্রভাতী প্রকল্পের এই অতিরিক্ত কার্যক্রমে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও প্রভাতী প্রকল্পের মাধ্যমে হাট-বাজার উন্নয়নে ৪৪৩ জন ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে ১৮ জন এলসিএস সদস্য, আরইআরএমপি-৩ প্রকল্পের মাধ্যমে ৭২০ জন ও জিওবি এর মাধ্যমে ২৪৩ জন এলসিএস সদস্য সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, আরইআরএমপি-৩ প্রকল্পে কর্মরতরা দৈনিক ২৫০ টাকা এবং এলসিএস সদস্যরা ৩০০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন। আরইআরএমপি প্রত্যেক কর্মীর ব্যাংক হিসাবে দৈনিক ৮০ টাকা এবং এলসিএস কর্মসূচীর প্রত্যেক কর্মীর ব্যাংক হিসাবে দৈনিক ১০০ টাকা জমা হয়। তিন বছর পর তারা সঞ্চিত অর্থ মুনাফা সহ ফেরত পাবেন।
এ ব্যাপারে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জানান, কোভিড -১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত কর্মহীন মানুষের জীবন ও জীবীকায়নের জন্য জরুরী কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এর গৃহীত কর্মসূচির অংশ এই প্রভাতী প্রকল্প। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কুড়িগ্রাম এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।