।। টেক ডেস্ক ।
বর্তমান স্মার্টফোন সবার হাতে হাতে। আর তাতে যদি থাকে ইন্টারনেট সংযোগ। তাহলে পুরো বিশ্ব আপনার হাতের মুঠোয়। দিনের বেশিরভাগ সময় মানুষ কাটায় স্মার্টফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার, অনলাইন ক্লাস, মিটিংয়ের কারণে সময় কাটে মোবাইল ফোনের সঙ্গে।
সম্প্রতি একটি সমীক্ষা বলছে, মানুষ দৈনিক গড়ে ৪.৮ ঘণ্টা খরচ করেন মোবাইল ফোনের নানা অ্যাপের পেছনে। যা হিসাব করলে, একজন মানুষ দিনে যতক্ষণ জেগে থাকেন তার প্রায় এক তৃতীয়াংশ খরচ করছেন মোবাইলের নানা অ্যাপস ব্যবহারে।
অ্যাপ অ্যানি’র সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কেবল ২০২১ সালেই বাজারে এসেছে ২০ লাখ নতুন মোবাইল অ্যাপ এবং গেইম। বছরে ১০ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি ইনকাম করে এমন অ্যাপের সংখ্যা বেড়েছে ২০ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী মোবাইলে ৩.৮ ট্রিলিয়ন ঘন্টা ব্যয় করেছেন গ্রাহকরা। যুক্তরাজ্যের মানুষেরা এদিক থেকে খানিকটা পিছিয়ে। এ বছর তাদের প্রতিদিন ফোনে ব্যয় করার গড় সময় ছিল চার ঘন্টা। যা বছরের বৈশ্বিক গড় ৪.৮ ঘন্টার চেয়ে কম।
তবে ২০১৯ সালে তাদের মোবাইল ব্যবহার করার সময় ছিল প্রতিদিন তিন ঘন্টা। ২০২০ সালে তা প্রতিদিন ৩.৭ ঘন্টা থেকে বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে,২০২১ সালে মোবাইল ব্যবহারের পরিমাণ বেড়েছে রেকর্ড সংখ্যক। ধুঁকে ধুঁকে মরছে বড় পর্দা, আর সবশ্রেণিতেই রেকর্ড ভাঙছে মোবাইল– সময়ক্ষেপণ, ডাউনলোড, আয়। এমনটা মন্তব্য করেছেন অ্যাপ অ্যানির প্রধান নির্বাহী থিওডর ক্রান্টজ।
দশটি দেশের বাজার থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করেছে অ্যাপ অ্যানি, যার মধ্যে আছে ভারত, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, মেক্সিকো, সিঙ্গাপুর এবং কানাডা। অন্যদিকে, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া আর দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবহারকারীরা দৈনিক পাঁচ ঘন্টার বেশি সময় বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপে খরচ করেন বলে উঠে এসেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে।
আরও চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে, মোবাইল ফোনের পেছনে ব্যবহারকারী ১০ মিনিট খরচ করলে তার সাত মিনিট খরচ হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমসহ ফটো এবং ভিডিও অ্যাপে। আর এই খাতেও শীর্ষস্থান টিকটকের দখলে। ২০২০ সালের তুলনায় বিশ্বব্যাপী এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপ ছিল টিকটক। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিমাসে নিয়মিত টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেড়শ’ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
অন্যদিকে, ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের বাজারে বিশ্বের শীর্ষ অ্যাপ এখনো আছে ইউটিউব। ৬০টি দেশের প্রতিটিতে দশ লাখবারের বেশি ডাউনলোড করা হয়েছে অ্যাপটি। দ্বিতীয় স্থানে ছিল নেটফ্লিক্স। জনপ্রিয়তা বেড়েছে মোবাইল গেইমেরও। এই খাতে ১১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার খরচ করেছেন ব্যবহারকারীরা।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, মহামারির লকডাউনের প্রভাবও পড়েছে মোবাইল অ্যাপ খাতে। শপিং অ্যাপের ব্যবহার বেড়েছে ২০২১ সালে। বিভিন্ন শপিং অ্যাপে ১০ হাজার কোটি ঘণ্টা সময় দিয়েছেন সারা বিশ্বের ব্যবহারকারীরা।
ডেটিং অ্যাপে বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের খরচ এরইমধ্যে ৪.২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। যা ২০১৯ থেকে ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফুড ডেলিভারি এবং এই সংক্রান্ত অ্যাপ ২০২১ সালে ১৯৪ বিলিয়ন অর্ডার সেশনে একটি নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি।
সূত্র: ডেইলি মেইল