।। নিউজ ডেস্ক ।।
১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেক মুক্ত হয় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা। প্রতিবছর উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সহায়তায় ভূরুঙ্গামারী প্রেস ক্লাব দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে । এ বছরেও পুষ্পস্তবক অর্পণ, শোভাযাত্রা, পদক বিতরণ, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ওই সময়ের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্যে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ৬ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিল। ওই সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাহেবগঞ্জ সাব-সেক্টরের মাধ্যমে ভূরুঙ্গামারীর দক্ষিণ দিক খোলা রেখে পশ্চিম, উত্তর ও পূর্ব দিক থেকে একযোগে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন মুক্তিযোদ্ধারা। পরিকল্পনা মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ নেতৃত্বে প্রবল আক্রমণ শুরু হয়। ১৩ নভেম্বর মিত্র বাহিনীর কামান, মর্টার প্রভৃতি ভারী অস্ত্র দিয়ে গোলাবর্ষণ শুরু হয় এবং ভারতীয় যুদ্ধবিমান আকাশে চক্কর দিতে থাকে। অবশ্য এর এক দিন আগে থেকেই মিত্র বাহিনীর বিমান শত্রুদের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করে। ভোর হওয়ার আগেই পাকবাহিনীর গুলি বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় পাক সেনারা পিছু হটে পাশের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ নামক স্থানে অবস্থান নেয়। ১৪ নভেম্বর ভোরে মুক্তিবাহিনী ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ভূরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও সিও (বর্তমান উপজেলা পরিষদ) অফিসের সামনে চলে আসে। এ সময় বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। যুদ্ধে একজন পাক ক্যাপ্টেন (আতাউল্লা খান) সহ ৪০-৫০ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। আটক করা হয় ৩০-৪০ জনকে।
ওই সময় সিও’র বাসভবনের (বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন) দোতলায় তালাবদ্ধ অবস্থায় কয়েকজন নির্যাতিত নারীকে পাওয়া যায়। তাঁদের অনেকেই ৫-৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন, এরপর ভূরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে ১৬ জন নারীকে উদ্ধার করা হয়।
দেশে এটিই প্রথম হানাদারমুক্ত উপজেলা বলে দাবি করেছেন এলাকার বিশিষ্টজনরা। কিন্তু
মেলেনি সরকারি স্বীকৃতি। সরকারি স্বীকৃতির দাবি নিয়ে কাজ করছে বিভিন্ন সংগঠন।