।। জেলা প্রতিনিধি ।।
রৌমারীতে ৫ম বিয়ে করে নতুন বউকে বাড়িতে নিয়ে এসে অন্তঃসত্ত্বা দ্বিতীয় স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী আব্দুল ওহাবের বিরুদ্ধে। বাবার বাড়ির জমির অংশ বিক্রি করে টাকা না দেয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে বেদম প্রহার করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ করেন অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূ। নির্যাতিত অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করান। রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার গয়টাপাড়া গ্রামে শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূ বাদি হয়ে শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় ১১দিন ধরে নির্যাতিত ওই গৃহবধু অন্যের বাড়িতে ঠাঁই নিয়ে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
জানাগেছে, রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাঁঠাল বাড়ি গ্রামের মৃত আবু তাহেরের কন্যা নির্যাতিত হালিমার (৩৮) সাথে বিয়ে হয় শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের পুত্র আব্দুল ওহাবের।
নির্যাতিত গৃহবধূূ হালিমা খাতুন জানান, সাত বছর আগে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আমাকে বিয়ে করেন আব্দুল ওহাব। বিয়ের সময় বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসাবে নগদ ৩ লাখ টাকা, ৪টি গরু, ৫০টি হাঁসসহ আসবাবপত্র প্রদান করা হয় । এক বছর পর তিনি আমাকে আমার বাবা বাড়ির জমির ভাগের অংশ বিক্রি করে আনার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতে আমি রাজি না হওয়ায় শুরু হয় আমার ওপর মানসিক ও শারীরিক নিযার্তন। তার অমানবিক নির্যাতনে আমার গর্ভে থাকা সাত মাসের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। ওই সময় থানায় অভিযোগ করতে চাইলে তিনি আমাকে তালাকসহ নানা ধরনের হুমকি দেন। এই ভয়ে তখন আমি কোথাও অভিযোগ করিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, এরপর আমার স্বামী আরও দুই বিয়ে করেন। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করায় ঐ দুই স্ত্রী তালাক দিয়ে চলে যায়। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আবারও বিয়ে করে পঞ্চম স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে এসে আমাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ অবস্থায় ১১দিন ধরে না পাচ্ছি চিকিৎসা করাতে, না পাচ্ছি খাবার কিনতে। থানায় অভিযোগ করেও কোনো বিচার পাচ্ছি না।
গয়টাপাড়া গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন ও আমির হোসেন জানান, শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে আব্দুল ওহাব পঞ্চম বিয়ে করে বউ নিয়ে বাড়িতে আসেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর একপর্যায়ে আব্দুল ওহাব তার অন্তঃসত্তা দ্বিতীয় স্ত্রী হালিমাকে বেদম মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসময় তার লাঠির আঘাতে স্ত্রী হালিমার মাথায় মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। পরে আহত হালিমাকে প্রতিবেশীরা রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করায় ।
অভিযুক্ত স্বামী আব্দুল ওহাব বলেন, আমার দ্বিতীয় স্ত্রী অবাধ্য চলাফেরা করায় তাকে তালাক দিয়েছি। তারপরেও সে আমার বাড়ি থেকে না যাওয়ায় জোর করে বের করে দিয়েছি।
এব্যাপারে রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//সুভাষ /সেপ্টেম্বর/২৯/২১