।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে বন্যার পানিতে ডুবে পচে গেছে রোপা আমনের ক্ষেত। হারিয়ে গেছে সাড়ে ১৭ হাজার কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। করোনা ও বন্যা মোকাবেলায় চরম আর্থিক সংকটে পড়া কৃষকরা পুনঃরায় আমন চারা রোপন করতে পাচ্ছে না। তার উপর দেখা দিয়েছে তীব্র বীজতলার সংকট।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদী বেষ্টিত ৮টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে রোপনকৃত ১ হাজার ৮’শ ৩৩ হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত এবং ১১ হেক্টর বীজতলা বন্যার পানিতে ডুবে থাকায় পঁচে নষ্ঠ হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১৭ হাজার ৫’শ ৫০ জন কৃষক। ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্ঠিত হাতিয়া, সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, বুড়াবুড়ি এবং তিস্তা নদী বেষ্টিত বজরা, গুনাইগাছ, থেতরাই, দলদলিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও দেড় শত চর বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে ডুবে যায় রোপা আপনের ক্ষেত। ২ সপ্তাহ পানিতে ডুবে থাকায় চারা গুলো পঁচে নষ্ট হয়ে যায়। পঁচে যাওয়া ক্ষেত গুলো পুনঃরায় রোপন না করলে কৃষকরা এ ক্ষতি পুষিতে নিতে পারবে না। বন্যা এলাকার কৃষকরা বর্তমানে অর্থ ও চরম চারা সংকটে পড়েছে। তাদের এ ক্ষতি পুরণে কৃষি বিভাগ ২’শ ৪০ জন কৃষককে মাস কলাই প্রনোদনা দেয়া সহ আগাম রবি চাষের প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিচ্ছে। তবে তারা আশা করছেন কৃষকরা তাদের জমি গুলো পুনঃরায় রোপন করবেন। উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ২৪ হাজার ৫’শ ৩৫ হেক্টর। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ২২ হাজার ৯’শ ৯০ হেক্টর।
হাতিয়া কামারটারী গ্রামের কৃষক রিয়াজুল ইসলাম (৬১), নামাটারী গ্রামের কৃষক খলিলউদ্দিন (৫৫) ও মহেসেনা খাতুন (৪২) জানায়, হামার সামান্য ২/১ একর জমি ধার দেনা করি আমন রোপন করছিন। কিন্ত বান আইসা সব ধবংশ করি গেইল। হামার সব স্বপ্ন বানের পানি ভাসি নিয়া গেইছে। এ্যলা কোথায় পাই ট্যাকা পয়সা কি দিয়া কি করি সেই চিন্তায় দিশেহারা হয়া পড়ছি। হামরা কি খামো, গরু গুলাক কি খাওয়াই। কি ভাবে বাঁচমো আল্লা ছাড়া কেউ কবার পায় না।
ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী জানান, তার ৪ বিঘা জমিতে লাগানো আমন ক্ষেত সম্পন্ন পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। চারার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পেট ভাত আর গরু বাচাঁর জন্য জন্য ২ বিঘা জমি পুনঃরায় রোপন করেছি। চারার যে দাম তাতে খরচ উঠবে না।
হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেন বিএসসি বলেন, করোন ও বন্যায় এবার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা চরম ক্ষতির মধ্যে দিন যাপন করছে। বন্যায় তাদের এক মাত্র স্বপ্ন হারিয়ে যাওয়ায় আগামীতে তারা আরো মহা বিপদে পড়বে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিশেষ প্রনোদনা দেয়ার দাবী জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, পচে যাওয়া ক্ষেত গুলো ভেঙ্গে পুনঃরায় চারা রোপনের সময় আছে। তারা যদি কষ্ট করে আমন লাগায় তাহলে ষোল আনা ফসল হবে। তবে মাস কলাই সহ আগাম রবি ফসলের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রনোদনার দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/সেপ্টেম্বর/১৩/২১