।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তার স্ত্রী দুই সন্তানের জননী উর্মিলা বেগম বাদী হয়ে রংপুর কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর নির্যাতিতা ওই গৃহবধু চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।
মামলা ও ভূক্তভোগি সূত্রে জানা গেছে, গত ২০০৬ সালে রংপুর সদরের ঠিকাদার পাড়া এলাকার শাহাবাজ মাষ্টারের পুত্র উলিপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান (৪৮)এর সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় পাশর্^বর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার সঠিবাড়ী গ্রামের এনামুল হক সরদারের মেয়ে উর্মিলা বেগম (৩৫) এর। বিয়ের সময় গৃহবধুর পিতা শাহিনুর রহমানকে যৌতুক হিসেবে নগদ টাকা আসবাবপত্র ও স্বর্ণালংকার প্রদান করেন। এরপর মেয়ের সুখের জন্য উর্মিলা বেগম ও জামাই শাহিনুরের নামে রংপুর শহরের ঠিকাদার পাড়ায় ৬ শতক জমি কিনে ৩ তলা বিশিষ্ট একটি পাকা বাড়ি তৈরি করে দেন। যার নির্মাণাধীন কাজ এখনও চলমান রয়েছে।
উর্মিলা বেগমের অভিযোগ, তার স্বামী (শাহিনুর রহমান) প্রায় প্রতিদিনই বাবার বাড়ি থেকে ৫০ লাখ টাকার নিয়ে আসার চাপ দিতে থাকেন। এই টাকা আনতে অস্বীকার করলে উর্মিলা বেগমের উপর চলত অমানসিক নির্যাতন। এনিয়ে একাধিকবার উভয়ের স্বজন ও স্থানীয় লোকজন শালিস বৈঠক করলেও কিছুতেই ক্ষান্ত হননি শাহিনুর। গত ২২ জুলাই রাতে পূণরায় শাহিনুর রহমান শ্বশুর বাড়ি থেকে স্ত্রী উর্মিলা বেগমকে ৫০ লক্ষ টাকা ও তিন তলা বাড়ির পুরোটা তার নামে লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতে তিনি অস্বীকৃতি জানালে উর্মিলার উপর চলে পাশবিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে দুই দিকে টেনে ধরেন শাহিনুর। পরের দিন ২৩ জুলাই আবারো উর্মিলার উপর নির্যাতন চালায় তিনি। এসময় তার আত্মচিৎকারে প্রতিবেশি লোকজন বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তাকে উদ্ধার করে। ৯৯৯ এ কল করে সে যাত্রায় বেঁচে যায় উর্মিলা। পরে স্বজনরা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় গত ২৬ জুলাই উর্মিলা বেগম বাদি হয়ে রংপুর কোতয়ালী থানায় যৌতুকের দাবিতে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। স্বামীর পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও ভয় কাটেনি উর্মিলা বেগমের। শাহিনুর রহমান মাদকাসক্ত ও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ছেন বলেও অভিযোগ করেন স্ত্রী উর্মিলা। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
রংপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুর রশিদ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/আগস্ট/১৭/২১