।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে করোনার নমুনা পরীক্ষার নামে নিয়ম বর্হিভূতভাবে টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। করোনা পরিক্ষা করতে আসা ব্যক্তিদের অভিযোগ, মাইকিং করে বিনামূল্যে টেষ্টের কথা বললেও এখানে তা মানা হচ্ছে না। প্রতিজন ব্যক্তির কাছ থেকে ১’শ থেকে ২’শ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে বলেও জানান তারা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা নমুনা পরিক্ষার নামে টাকা নেয়া হচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায়, মানুষজনের করোনা উপসর্গ থাকলেও, তা পরিক্ষা করতে অনিহা দেখা গেছে। এতে করে এ উপজেলায় দ্রুত করোনাভাইরাস বিস্তারের আশংকা করছেন অনেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে এ উপজেলায় ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। মারা গেছে ২ জন।
সূত্রটি আরো জানায়, চলতি (জুলাই) মাসে করোনার নমুনা পরিক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হওয়ার কথা। কিন্ত উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সকল বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে করোনার নমুনা পরিক্ষা করতে আসা লোকজনের কাছ থেকে ইচ্ছামত ১’শ থেকে ২’শ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধান চালিয়ে করোনা পরিক্ষার নামে টাকা আদায়ের সত্যতা পাওয়া গেছে। সাধারণত সরকারি টাকা গ্রহণ করতে হলে রসিদ দিতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নমুনাদাতাদের কাউকে কোনো রসিদ দেওয়া হয়নি।
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের অধিকাংশ পরিবারই দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস। বর্তমান এ উপজেলায় করোনার প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিটি বাড়িতে করোনা উপসর্গ জ্বর, সর্দি, হাচি, কাশি, রোগি রয়েছে। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভীতি সবার মনে কাজ করছে। কিন্তু করোনা পরিক্ষার নামে টাকা আদায় করায় জনমনে মিশ্রি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
করোনার নমুনা পরিক্ষা করতে আসা দলদলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ সরকার জানান, টাকা নিলেও কিছু করার নেই। এদের সাথে তর্ক করে লাভ নেই, প্রয়োজন আমার, যা চাইবে তাই দিতে হবে। এক হাজার টাকা চাইলেও তা দিতে বাধ্য আমরা।
উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাইজিদ ও আতাউর রহমান তাদের খালা এবং দাদির করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় পরিক্ষার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তাদের কাছেও ১’শ টাকা করে নেয়া হয়েছে।
করোনা উপসর্গ না থাকলেও ধামশ্রেনী কাশিয়াগাড়ি এলাকার দুই বন্ধু মাজেদুল এবং মামুন মিয়া করেনা পরিক্ষা করতে আসলে তাদের কাছ থেকেও ২’শ করে টাকা নেয়া হয় বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরিক্ষার দায়িত্বে থাকা রেজাউল ইসলাম ও তাজুল মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তারা টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন,আমি নিজেই এখন করোনা পজেটিভ হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি। আমি ঘোষণা দিয়ে এসেছি ফ্রিতে করোনা পরীক্ষা করা হবে। আমার অনুপস্থিতিতে কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে উপযুক্ত প্রমাণাদি পেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, জুলাই মাসে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করোনা পরিক্ষা করার কথা। তবে করোনা পরিক্ষার নামে টাকা নেয়ার খবর শুনে তাৎক্ষনিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সাথে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/জুলাই/৩০/২১