।। টেক ডেস্ক ।।
বর্তমান স্মার্ট ফোন অতি প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। কিন্তু এই হ্যান্ডসেট বা স্মার্ট ফোনেও ম্যালওয়্যারের আক্রমণ বা হ্যাকিংয়ের শিকার হইয়ে থাকে। সে বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরী। আপনার ফোনে কি কেউ আড়ি পেতেছে? কেউ কি আপনার হ্যান্ডসেটকে নজরদারিতে রাখছে, কিভাবে বুঝবেন তা নিয়ে দ্বিধায় পরতে হয়।
কিছু বিষয় খেয়াল করলে ধরতে পারবেন আপনিও।
ফোনের ব্যাটারি দ্রুত চার্জ হারায় : হ্যান্ডসেটের ব্যাটারিতে কোনো সমস্যা না থাকার পরেও যদি স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত চার্জ হারায়, তাহলে বুঝতে হবে ফোনের ভেতরে সক্রিয় অবস্থায় কোনো ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো অ্যাপ রয়েছে। আর এজন্যই ফোনের ব্যাটারি দ্রুত চার্জ হারাচ্ছে। ফোন ব্যবহার না করলেও এসব ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপ সক্রিয় থেকে যায়। এজন্য প্রথমে ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করতে হবে এবং জানার চেষ্টা করতে হবে নির্দিষ্ট কোনো মুহূর্তে কতগুলো অ্যাপ কার্যকর অবস্থায় রয়েছে। একসঙ্গে যদি একাধিক অ্যাপ চলমান থাকে তাহলে দ্রুত ফোনে ব্যাটারি চার্জ হারায়। এ কারণে কোনো অ্যাপ ব্যবহার করার পর সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ করে দিতে হবে। পাশাপাশি ম্যালওয়্যার চেক করার জন্য বিভিন্ন সিকিউরিটি প্রোগ্রামও রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে ফোনে ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো অ্যাপের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়।
ফোনে অপরিচিত অ্যাপ : ফোনে ডাউনলোড করা অ্যাপ নিয়মিত চেক করতে হবে। ফোনে যদি এমন কোনো অ্যাপ থাকে যা আপনি ডাউনলোড করেননি কিংবা এমন কোনো অ্যাপ দেখা যাচ্ছে যা অপরিচিত, তাহলে সেটি হতে পারে কোনো এক হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যার।
ধীরগতির ফোন : স্মার্টফোন স্লো বা ধীর গতির হয়ে যাওয়াটাও উদ্বেগের কারণ হতে পারে। তাই যখন মনে হবে স্মার্টফোন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক স্লো কাজ করছে, তখনই চেক করার চেষ্টা করুন ফোনের ভেতর কোনো ম্যালওয়্যার আছে কিনা।
অতিরিক্ত ডাটা খরচ : আপনি ফোন অপারেটরের থেকে ডাটা কিনেছেন, কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে যদি কেনা ডাটার সীমা শেষ হয় তাহলে সেটিও হতে পারে উদ্বেগের বিষয়। ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপের উপস্থিতির কারণে এমনটি হতে পারে, অনেক ক্ষেত্রে এসব ম্যালওয়্যার কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাপ ব্যবহারকারীর অজান্তে ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে তার অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করতে পারে।
ফোনের অস্বাভাবিক আচরণ : ফোন ব্যবহার করতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়ছেন? কোনো অ্যাপ হঠাৎ করে তার কার্যকারিতা বন্ধ করে দিচ্ছে? কিংবা অ্যাপ ক্রাশ করছে? এমনকি আপনার পরিচিত কোনো ওয়েবসাইটকে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে? হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যারের উপস্থিতি অনেক সময় ফোনকে এ ধরনের অস্বাভাবিক আচরণের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
ফোন অতিমাত্রায় গরম হচ্ছে:দীর্ঘ সময় ফোন ব্যবহার করলে বিশেষত একটানা দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে গেমস খেললে কিংবা নেভিগেশন সফটওয়্যার ব্যবহার করলে ফোন গরম হয়ে ওঠে। এটা নিতান্ত স্বাভাবিক ঘটনা। যদি ফোন ব্যবহার না করার পরও সেটি গরম হয়ে ওঠে, তবে তা দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যারের উপস্থিতির কারণে এভাবে ফোন ব্যবহার না করার পরও গরম হয়ে উঠতে পারে।
অপ্রত্যাশিত ফোন কল কিংবা মেসেজ: আপনার ফোনে এমন কোনো নম্বর থেকে ফোন কল কিংবা টেক্সট মেসেজ পেয়ে থাকেন যেটা গতানুগতিক আপনার পরিচিত কোনো নম্বর থেকে একেবারে ভিন্ন, তাহলে সেটিও হতে পারে ভীষণ উদ্বেগের কারণ। এ ছাড়া আপনার ইনবক্সে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ও অস্বাভাবিক কোনো বার্তার উপস্থিতিও আপনাকে ফাঁদে ফেলতে পারে।
আচমকা ফ্ল্যাশ লাইট অন: আপনি ফোন ব্যবহার করছেন না কিন্তু হঠাৎ লক্ষ্য করলেন আপনার ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন হয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা আপনার জন্য চরম অশনিসংকেত। এর কারণ হতে পারে দূর থেকে কেউ আপনার ফোনকে নিয়ন্ত্রণ করছে
গ্যালারিতে অপরিচিত ছবি কিংবা ভিডিও: আপনার ফোনে যদি এমন ছবি কিংবা ভিডিও পাওয়া যায় যেটি ইতোপূর্বে আপনি কখনও ধারণ করেননি, সেটিও হতে পারে আপনার ফোনে হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যারের উপস্থিতির আরও একটি কারণ। হয়তো-বা হ্যাকিং সফটওয়্যার কিংবা স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে আপনার অজান্তে কেউ দূর থেকে আপনার ফোনের ক্যামেরাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
সূত্রঃ সমকাল