।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে ২৪ ঘন্টা পার হলেও হদিস মেলেনি দুস্থ্যদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফের ১৫০ বস্তা চালের। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন তিনি চাল ফেরত দিয়েছেন। এদিকে গুদাম কর্মকর্তার দাবি তিনি কোন চাল পাননি। শুক্রবার ও শনিবার (১৬ ও ১৭ জুলাই) ভিজিএফের এ চাল নিয়ে নানা নাটকীয়তা দেখা গেছে। শনিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চালগুলো কার এবং কোথা থেকে এসেছিল এ বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য জানা যায়নি।
জানা গেছে, আসন্ন ইদুল আযহা উপলক্ষে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে ৬ হাজার ৩’শ অসহায় দুস্থ্য পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী গত শুক্রবার (১৬জুলাই) ওই ইউনিয়নে বিতরণের জন্য ৬ টি ট্রলিতে ৫০ কেজি ওজনের ৯’শ বস্তা ভাল চাল খাদ্য গুদাম থেকে বের করা হয়। চালগুলো খাদ্য গুদাম থেকে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার পথিমধ্যে এসব চালের ১৫০টি বস্তা খাওয়ার অনুপযোগি পঁচা ও দুর্গন্ধে পরিণত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন পঁচা চাল নিতে রাজি না হয়ে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানকে অবগত করেন। এসময় ওই কর্মকর্তা চেয়ারম্যানকে চাল ফেরত দিতে বলেন। তাৎক্ষনিক ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করে ওই ট্রলিতে করে চালগুলো ফেরত পাঠান। এরপর শুরু হয় নানা নাটকীয়তা। চেয়ারম্যানের ভাষ্য মতে তিনি চালের বস্তাগুলো গুদামে ফেরত পাঠিয়েছেন, আর গুদাম কর্মকর্তার দাবি পঁচা চালগুলো তার নয় এবং তিনি এরকম কোন চাল ফেরতও নেননি। এ নিয়ে উপজেলায় নানা নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উলিপুর সরকারি খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান ও মিল চাতাল ব্যসায়ীদের সাথে একটি সিন্ডিকেট চক্র তৈরি করেন। চক্রটি গুদাম কর্মকর্তার সাথে যোগসাজস করে চলতি বছর ধান, গম, চাল সংগ্রহে নানা অনিয়মের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পঁচা চালগুলোর মালিক জনৈক এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নেতার বলেও জানা গেছে।
নিম্নমানের চাল বহনকারী গাড়ীর চালক নাহিদ ইসলাম বলেন, খাদ্য গুদাম থেকে যে বস্তা দিয়েছে আমি সেই বস্তা এনেছি। চাল ভাল না খারাপ সেটা তো আর আমি দেখিনি।
হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বলেন, ১টি গাড়ীর ১৫০ বস্তা চাল প্লাষ্টিকের পুরোনা বস্তা ও সরকারি সীল না থাকায় চাল গুলো নেইনি। সাথে সাথে গুদাম কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ওই গাড়িতে করেই চালগুলো ফেরত দিয়েছি। বিষয়টি ইউএনও স্যার কে জানিয়েছি।
মিল চাতাল মালিক সমিতির আহবায়ক মাহফুজুর রহমান বুলেট বলেন, চালগুলো (১৫০ বস্তা পঁচা চাল) সুটারের জন্য আনা হয়েছিল। ভুল করে এসব চাল হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়েছিল। পরে এসব চাল সুটারে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শাহিনুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্র্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আলাউদ্দিন বসুনিয়া বলেন, গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) আমাকে জানিয়েছেন চালগুলো আমাদের নয়। চালগুলো কোথা থেকে এসেছে এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
উলিপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বলেন, চালের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। কিন্তু কোন পক্ষ থেকে আমাদের লিখিত কিংবা মৌখিকভাবে জানানো হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, চালের হদিস বের করতে তদন্ত চলছে। তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/জুলাই/১৭/২১