।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে চুরির অপবাদে ৭ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর মা ফিরোজা বেগম থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই রঘুরায় গ্রামে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগি পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম-ফিরোজা বেগম দম্পতির ৭ম শ্রেণীর পড়ুয়া ছেলে ফুয়াদ আলী (১২) বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিকেলে বাড়ির পাশে মানিক মোড়ে খেলতে যায়। এসময় তার সাথে থাকা বাই সাইকেলটি ফাঁকা জায়গায় একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে রেখে প্রসাব করতে বসে। এসময় কয়েকজন লোক এসে তাকে খুঁটির সাথে সাইকেলটি রেখে ডিস লাইনের সরঞ্জামাদি চুরির অপবাদ দেয়। পরে তারা ফুয়াদকে ধরে পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের নিধিরাম বানিয়া পাড়া গ্রামের ডিস ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়।
এসময় ডিস লাইনের সরঞ্জামাদী চুরির অপবাদে নজরুলে বাড়ির ঘরে আটকিয়ে ফুয়াদকে রঁশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাঠি,রড,প্লাস,হাতুরি দিয়ে এলোপাথারি মারধর করে শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম করে। পরে খবর পেয়ে ফুয়াদের চাচা জাহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় কয়েকজন নজরুলের বাড়িতে গিয়ে ফুয়াদকে আটক অবস্থায় দেখতে পায়। এসময় নজরুল ইসলাম ডিসের মালামাল চুরি বাবদ ক্ষতি পূরণ হিসেবে তাদের কাছে ১ লাখ টাকা দাবী করেন। পরে আলোচনা সাপেক্ষে ৮হাজার টাকা দিয়ে ফুয়াদকে ছাড়িয়ে নেন স্বজনরা।
এই বিষয়ে ফুয়াদ বলেন,আমি কোন কিছু চুরি করিনি। পোলের সাথে সাইকেল রাখছি। সেখান থেকে কয়েকজন লোক নজরুল ইসলামের বাড়িতে এনে আমাকে বেঁধে পিটিয়েছে। হাতুড়ি,প্লাস,লোহা,পেরেক দিয়েও গায়ে হেনেছ। পরে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরপর কি হয়েছে আমার মনে নেই।
ফুয়াদের মা ফিরোজা বেগম বলেন,আমার ভালো ছাত্র। এলাকায় শান্ত,ভদ্র ছেলে হিসেবে সবাই চেনে। সে কোন চুরি করতে পারে না। চুরির অপবাদ দিয়ে এভাবে কেউ কাউকে মারতে পারে না। ছেলেকে জিম্মি করে এক লাখ টাকা দাবী করেছিল। পরে ছেলেকে বাঁচাতে ৮ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছি। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৩ দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়ে আজ রিলিজ নিয়ে বাসায় এনেছি। এই বিষয়ে উলিপুর থানায় আমি নিজে লিখিত অভিযোগ করেছি।
অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম বলেন,আমার ডিসের লাইনের তার,মেশিন বেশ কয়েক বার চুরি হয়ে গেছে। ঘটনার দিন এক গ্রাহকের কাছে ফোনে শুনতে পাই ফুয়াদ পোলে চরে মেশিন খুলছিল। আমি গিয়ে সেখানে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসি। ফুয়াদের স্বজন আসলে ক্ষতি পূরণ চাই তারা ৮হাজার টাকা দিয়ে মিটমাট করে চলে যায়।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির বলেন, এ ব্যাপারে একটি নিয়মিত আইনে মামলা হয়েছে। মামলা নং-২৩- ২৮জুন, আসামি ধরার অভিযান চলছে।
//নিউজ/উলিপুর//মালেক/জুন/২৮/২১