।। জেলা প্রতিনিধি ।।
কুড়িগ্রামে করোনা সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম শহরসহ কুড়িগ্রাম পৌরসভার পুরো এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী শনিবার (১৯ জুন) বিকাল থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহের জন্য এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। এর আগে গত মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকাল থেকে পৌর এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে (২,৩ ও ৭ নং ওয়ার্ড) কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রশাসন।
সূত্র জানায়, জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে জেলা করোনা সংক্রান্ত কমিটির জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে সকল সদস্যদের পরামর্শক্রমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জেলা শহরের পৌর এলাকায় যান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপসহ দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মিটিংয়ে উপস্থিত কমিটির এক সদস্য জানান, নতুন আরোপিত বিধিনিষেধে পৌর এলাকায় হোটেল রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও সেখানে ভোক্তারা বসে খাবার খেতে পারবেন না। খাবারের হোটেল ও দোকানগুলো শুধু পার্সেল সার্ভিস চালু রাখতে পারবে। বাজার ও দোকানপাট সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে চালু থাকবে। এরপর বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও পৌর এলাকায় যান চলাচল ও জনসমাগম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অহেতুক আড্ডা দেওয়ার ওপরও বিধি নিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে প্রজ্ঞাপন আকারে বিস্তারিত জানানো হবে।
ওই সদস্য আরও জানান, এক সপ্তাহের জন্য এই বিধিনিষেধ জারি হলেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না হলে এর সময় ও পরিধি বাড়ানো হতে পারে।
সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জেলা শহরসহ পৌর এলাকায় বিধি নিষেধের পরিধি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূর্বে বিধিনিষেধ জারি করা তিনটি ওয়ার্ডসহ পুরো পৌর এলাকা বিধি নিষেধের আওতায় আনা হচ্ছে। আগামী শনিবার থেকে এটি কার্যকর করা হবে।
সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আমরা পুরো পৌর এলাকা কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী শনিবার বিকাল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।’
এবারের বিধি নিষেধে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে। সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত পৌর এলাকার সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তবে জরুরী সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান এই বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাকবে। এছাড়াও পৌর এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ১৬ জুন পর্যন্ত জেলায় এক হাজার ৩৭৫ জন ব্যাক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কয়েক সপ্তাহ থেকে সংক্রমণের মাত্রা বেশি। এর মধ্যে সদর উপজেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬শ’৮২ জন। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২৭ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগ আরও জানায়, চীন সরকারের দেওয়া উপহার সিনোভ্যাক্সের ৮হাজার ৪শত ডোজ ভ্যাকসিন কুড়িগ্রামে পৌঁছেছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই স্টোরে এসব ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে কবে থেকে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে সে ব্যাপারে এখনও কোনও নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলে জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//চন্দন/জুন/১৭/২১