।। সুভাষ চন্দ্র ।।
ভূরুঙ্গামারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান তার কতিপয় সমর্থককে দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে । ঐ পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ৫দিন ধরে বন্ধ থাকলেও স্থানীয় উপজেলা কিংবা জেলা প্রশাসন ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম সচল করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সার্টিফিকেট সহ সব ধরনের জরুরী সেবা থেকে ইউনিয়নটির মানুষ বঞ্চিত রয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে সেবা গ্রহিতাদের মধ্যে ততই ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে ।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় গণউপদ্রব সৃষ্টির অভিযোগে দায়ের করা মামলার কারনে ওই ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমানকে ১৭ জানুয়ারী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর যথারীতি প্যানেল চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান জেল থেকে বেড়িয়ে তাকে বরখাস্তের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। মহামান্য হাইকোর্ট চেয়ারম্যানের বরখাস্তের আদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন । হাইকোর্টের ওই আদেশ যথাযথ প্রক্রিয়ায় জেলা প্রশাসক বরাবর না পৌছায় চেয়ারম্যানের বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু লোক নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবন ঘেরাও করে ঝাড়ু ও সেন্ডেল মিছিল বের করে এবং রোববার (৬ জুন) থেকে ৩০/৩৫ জন লোক নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কক্ষে তালা লাগিয়ে অবস্থান নেয়। এর আগে চেয়াম্যানের নেতৃত্বে কিছু লোক ইউনিয়নের সেবা কেন্দ্র থেকে জোড়পূর্বক ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও প্রিন্টার নিয়ে যায়। এব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান গত ৮ জুন বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানসহ মোট ৩৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। প্যানেল চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান জানান, পরিষদে তালা দিয়ে তার ভাড়াটিয়া লোকেরা অবস্থান নেয়ায় ইউপি সচিবও সদস্য গণ পরিষদে যেতে পারছেনা ফলে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সেবা নিতে আসা জুয়েল হাওলাদার (৩৮) জানান, ইন্সুরেন্সের টাকা জমা দেবার জন্য ব্যাংক এশিয়ায় (তথ্যসেবা কেন্দ্র) ৫ দিন থেকে ঘুরছি, ঘর বন্ধ। বুলবুলি (৩০) ও আইয়ুব আলী (৪০) বলেন, সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের জন্য এসেছি, পরিষদ তালা বন্ধ দেখে ঘুরে যাচ্ছি।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম সাংবাদিকদের জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে তালা খুলে দেবার জন্য বলেছি । পুলিশী সহযোগীতা লাগলে আমরা দিতে চেয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার দেব শর্মা জানান, তালা খোলার ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
//নিউজ/কুড়িগ্রাম//সুভাষ/জুন/১১/২১